যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে স্বামী মোশারফ হোসেনকে (৪০) মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক জাবিদ হোসেন। একই সঙ্গে ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে হবিবর রহমানকে (৭০) যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ উভয়কে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
আসামি মোশারফ হোসেন পলাতক থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, নগরীর মন্থনা এলাকায় স্বামী মোশারফ হোসেন দীর্ঘদিন ধরে যৌতুকের দাবিকৃত টাকার জন্য স্ত্রীর ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন। ২০০৬ সালের ১৫ অক্টোবর রংপুর পুনরায় স্ত্রী মর্জিনার কাছে মোশারফ যৌতুকের টাকা দাবি করে নির্যাতন চালায়। এক পর্যায়ে সে ক্ষুব্ধ হয়ে স্ত্রীর শরীরে কেরোসিন তেল ঢেলে দেয়, এ সময় তার দাদা হবিবর রহমান মর্জিনাকে ধরে রাখে। পরে আগুন ধরিয়ে দেয়।
মর্জিনার চিৎকারে প্রতিবেশীরা তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর আগে তিনি চিকিৎসক ও পুলিশের কাছে তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়ার জবানবন্দি দেন। পরে ১৭ অক্টোবর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহত মর্জিনার বড় ভাই রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে রংপুর কোতোয়ালি মেট্রো থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
১৪ বছর ধরে মামলাটি বিচারাধীন অবস্থায় আদালত ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। এরপর আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় মঙ্গলবার আদালতের বিচারক স্বামী মোশারফ হোসেনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। একই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সহযোগিতা করার অপরাধে দাদাশ্বশুর হবিবরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশসহ উভয়কে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন।