একীভূত হচ্ছে ৬ রাজনৈতিক দল?
- আপডেট সময় : ০৬:০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ১৩৮৬ বার পড়া হয়েছে
রাজনীতিতে নিজেদের অবস্থান আরো শক্তিশালী করতে এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ, এবি পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও আপ বাংলাদেশের জোট গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।
আস্থা ডেস্কঃ
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে রাজনীতিতে নিজেদের অবস্থান আরো শক্তিশালী করতে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি) ও সাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বাধীন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)সহ আরো অন্তত ৩ রাজনৈতিক দল একীভূত হয়ে এক দলে পরিণত হওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে।
একই সঙ্গে একীভূত দলের সঙ্গে এবি পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও আপ বাংলাদেশের জোট গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে। এদিকে একীভূত এবং জোট গঠন নিয়ে একাধিবার অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হলেও, প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ সংগঠনগুলোর নেতারা।
গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের কেউ কেউ বলছেন, এরকম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে, এনসিপির এক নেতা জানান, ‘একীভূত হওয়ার আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা হয়নি। এমনকি গণঅধিকার পরিষদ থেকে কোনো প্রস্তাবনাও আসেনি। তবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তাদের সঙ্গে আমাদের একসঙ্গে কাজ করার চিন্তা রয়েছে।
দেশে নির্বাচনি হাওয়া বইছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল কিছুদিন ধরেই নির্বাচনি জোট গঠন নিয়ে বিশ্লেষণ করছে। জানা গেছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের বিভিন্ন বিষয়ে কাছাকাছি অবস্থান নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এনসিপির দফায় দফায় অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়েছে।
এসব বৈঠকে ঐক্যবদ্ধভাবে অগ্রসর হওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এতে প্রাথমিক পর্যায়ে অগ্রগতি হয়েছে বেশ। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে সামনের দিনগুলোতে আরো বৈঠক-আলোচনা হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী মাসে রাজনীতিতে নতুন একীভূত দল ও জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে।
রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশের ক্ষেত্রে এনসিপি ও গণঅধিকার পরিষদের প্রেক্ষাপট অনেকটা অভিন্ন। কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে দুটি দলেরই যাত্রা শুরু। ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গঠিত বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ ২০২১ সালে গণঅধিকার পরিষদে রূপ নেয়। আর ২০২৪ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্তরাই আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কিছুদিন পর গড়ে তোলেন এনসিপি।
আবার এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের অনেক নেতারই আন্দোলন-কর্মসূচিতে হাতেখড়ি হয়েছিল নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ থেকে। সেই হিসেবে নুরুল হক নুর এনসিপির অনেক নেতার ‘রাজনৈতিক গুরু’।
গণঅধিকার পরিষদ গত বছর নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পেলেও এনসিপি এখনো তা পায়নি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনসিপি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতারা বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এগোতে চাই। এনসিপির সঙ্গে একীভূত হওয়া দলের সংখ্যা বাড়তে পারে। একীভূত দল ও জোটের বিভিন্ন ইস্যু ও নির্বাচনকেন্দ্রিক ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি আগামী মাসে ঘোষণা হতে পারে।
গণঅধিকার পরিষদের একজন নেতা বলেন, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর হামলার শিকার হয়ে এতদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি এখনো অসুস্থ। তিনি সুস্থ হয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করলে এ ব্যাপারে আরও আলোচনা হবে।
এবি পার্টির কেন্দ্রীয় একজন নেতা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর ঐক্য নিয়ে বহুমাত্রিক আলোচনা চলছে। এখানে একীভূত হওয়া নিয়ে এক ধরনের আলোচনা যেমন চলছে, তেমন ইস্যুভিত্তিক জোটবদ্ধ হওয়ার আলোচনাও আছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে আরও আলোচনা হবে।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘একীভূত না হলে ইস্যুভিত্তিক জোট গড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে একাধিকবার অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলে বিষয়টিকে আমরা ইতিবাচক হিসেবে বিবেচনা করছি।
আপ বাংলাদেশের শীর্ষ এক নেতা আলোচনার কথা স্বীকার করে বলেন, এনসিপির সঙ্গে অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা হয়েছে। একীভূত না হলে জোটগতভাবে এগোনোর বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। এই আলোচনা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। সামনে আরো আলোচনার মধ্য দিয়েই কোন একটি সিদ্ধান্ত আসবে।
এ বিষয়ে বক্তব্য গণঅধিকার পরিষদের (জিওপি) সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত তাদের অনেকে আমাদের সঙ্গে রাজনীতি করেছে। রাজনীতিতে আলোচনা সব সময় হয়। তবে একীভূত হওয়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোন আলোচনা হয়নি। আবার সব বিষয় নিয়ে আলোচনার সময় আসেনি।




















