সাবেক ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবার ওপর হামলার ঘটনায় ডিএনএ প্রতিবেদন হাতে পেয়েছে পুলিশ। রবিউলের পরনের প্যান্টে লেগে থাকা রক্তের সঙ্গে ইউএনওর বাবা শেখ উমর আলীর রক্তের ডিএনএর মিল রয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইমাম জাফর।
এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ইউএনও ওয়াহিদা, তার ছেলে ও বাবার পরনের কাপড় ঢাকায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ডিএনএ বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠানো হয়। গত বুধবার বিকেলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে সেই ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদন পাঠানো হয়। সিআইডি ডাকযোগে আদালতেও প্রতিবেদনটি পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ডিবির ওসি ইমাম জাফর।
সরকার আপামর জনগোষ্ঠীর মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে কাজ করছে: প্রধানমন্ত্রী
পুলিশ জানায়, ইউএনওর ওপর হামলার ঘটনায় ইউএনওসহ বাড়ির সদস্যদের পরনের কাপড়, সংগৃহীত বিভিন্ন আলামতে চারজনের ডিএনএর তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে তিনজন হলেন ইউএনও ওয়াহিদা, তার বাবা ও তার ছেলে। অপরজন হলেন হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত তারই বাসভবনের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী রবিউলের।
এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর ইউএনওর ওপর হামলার ঘটনায় দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন রবিউল। এ সময় তিনি বলেন, চুরির দায়ে অভিযুক্ত হয়ে চাকরি হারানোর কারণে ইউএনওর ওপর তার ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সেই ক্ষোভ থেকে গত এপ্রিলের শুরুতে হামলার পরিকল্পনা করেন রবিউল। এই হামলার ঘটনা তার একক পরিকল্পনাতেই সংঘটিত হয়েছে বলেও জবানবন্দিতে জানিয়েছেন তিনি।
পুলিশের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতেই রবিউলের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর হামলার ঘটনায় বিভিন্ন জব্দকৃত আলামত, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় প্রাপ্ত তথ্য, আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, স্থানীয়দের সাক্ষ্য এবং ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফলে আসামি রবিউলের হামলার ঘটনায় সম্পৃক্ততার বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। এবার দ্রুততম সময়ের মধ্যে অভিযোগপত্র দেয়া হবে।
গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায় ইউএনওর সরকারি বাসভবনের শৌচাগারের জানালা দিয়ে ঢুকে হামলা চালান আসামি রবিউল। হামলার ঘটনায় গত ৪ সেপ্টেম্বর আসাদুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর হোসেন এবং রংমিস্ত্রি নবীরুল ইসলাম ও সান্টু কুমার বিশ্বাসকে আটক করে র্যাব। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকায় জাহাঙ্গীরকে পরে ছেড়ে দেয়া হয়। আটক অপর তিনজন এখন কারাগারে রয়েছেন। গত ১০ সেপ্টেম্বর রাতে রবিউলকে আটক করেন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার দায় স্বীকার করেছেন বলে ১২ সেপ্টেম্বর জানায় পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইমাম জাফর বলেন, তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আসামি রবিউলের বিষয়ে যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করার পর তার সম্পৃক্ততার বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। মেডিকেল সনদপত্রের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আবেদন করা হয়েছে। ঘটনার দিন যারা অ্যাম্বুলেন্সে ইউএনও ও তার বাবাকে মেডিকেলে নিয়েছেন তাদেরও সাক্ষ্য নেয়া প্রায় শেষ।