একটি স্টেডিয়াম থাকার পরও নির্মাণ করা হচ্ছে আরেকটা স্টেডিয়াম
- আপডেট সময় : ১০:২৯:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫
- / ১৩৪৪ বার পড়া হয়েছে
একটি স্টেডিয়াম থাকার পরও নির্মাণ করা হচ্ছে আরেকটা স্টেডিয়াম
স্টাফ রিপোর্টারঃ
২০১৯ সালের ‘উপজেলা পর্যায়ে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ প্রথম পর্যায়’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার রামঘর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে উপজেলা মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ শেষ হয়েছে। এই এলাকায় একটি মিনি স্টেডিয়াম থাকার পরও উপজেলার আকুবপুর ইয়াকুব আলী ভূইয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আরেকটি স্টেডিয়াম নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
১ টি মিনি স্টেডিয়াম থাকার পরও আরো ১টি স্টেডিয়াম নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এটিকে জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রচারের অংশ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলার আকুবপুর ইয়াকুব আলী ভূইয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আরেকটি স্টেডিয়াম নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা মোঃ বিল্লাল হোসেন। তিনি এখনো স্কুলের প্রধান শিক্ষক। উপদেষ্টা আসিফও একসময় এই স্কুলের ছাত্র ছিলেন।
মুরাদনগর স্টেডিয়ামের অডিটোরিয়াম নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। এ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানও আসিফ মাহমুদ নিজেই। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। প্রকল্পটির ওপর আগামী সেপ্টেম্বরে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হওয়ার কথা রয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র বলছে, ‘মুরাদনগর উপজেলায় বিদ্যমান মিনি স্টেডিয়াম উন্নয়ন, নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলা স্টেডিয়াম উন্নয়ন এবং মাগুরা জেলা স্টেডিয়াম কমপ্লেক্সে ডরমিটরি ভবন নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি মোট ১৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অনুমোদন প্রক্রিয়াকরণের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। এ প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৫ সালের জুলাই থেকে ২০২৮ সালের জুনের মধ্যে।
প্রকল্পটি ৫০ কোটি টাকার নিচে হওয়ায় মন্ত্রী বা উপদেষ্টা পর্যায়ে অনুমোদনযোগ্য। সাধারণত ৫০ কোটির ঊর্ধ্বে যে কোনো প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেক) অনুমোদন করতে হয়।
প্রকল্পটির ৬৪ দশমিক ৫ শতাংশ ব্যয় হবে ভবন ও অবকাঠামো নির্মাণে। এতে মোট ব্যয় হবে ১২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। খেলার মাঠ উন্নয়নে খরচ হবে এক কোটি ৮০ লাখ টাকারও বেশি।
জানতে চাইলে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোঃ আমিরুল কায়সার বলেন, যদি কোনো উপজেলা থেকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন আসে, তাহলে সেটি আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ফরোয়ার্ড করি। মন্ত্রণালয় তার বিধিমালা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে যে কেউ আবেদন করলে সেটি আমরা সরকারের কাছে পাঠিয়ে দিই। উপজেলা থেকে আবেদন এসেছে, আমি শুধু ফরোয়ার্ড করেছি। তার মানে এ নয় যে, এটির জন্য আমি আবেদন করেছি।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবদুর রহমান বলেন, এই উপজেলা ২২টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। বড় উপজেলা হওয়ায় আগের মিনি স্টেডিয়ামটিতে অন্য প্রান্তের মানুষ আসতে কষ্ট হয়। এলাকার মানুষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন আরেকটি স্টেডিয়ামের প্রস্তাব করা হয়েছে।
একটি থাকার পরও আরেকটি স্টেডিয়ামের প্রয়োজনীয়তা কী এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এলাকার ভৌগোলিক সীমার ভিত্তিতেই এমন চিন্তা করা হয়েছে। এ এলাকার জনসংখ্যা ছয় লাখের কাছাকাছি। ২০১৯ সালে শেষ হওয়া স্টেডিয়ামটিরও সংস্কার প্রয়োজন।
স্টেডিয়ামটির জন্য উপদেষ্টার বাবার স্কুলের মাঠকেই বাছাই করা হলো কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুর রহমান বলেন, ওই এলাকার অন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ বা কমিটি প্রস্তাব দেওয়ার মতো অত বড় স্কুলমাঠও নেই। জমি অধিগ্রহণের বিষয় ছিল, সেটি করতে গেলে খরচ আরো বেড়ে যাবে। সে বিষয় মাথায় রেখেই এমন প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ ছাড়া নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলায় বিদ্যমান স্টেডিয়ামটি ৯ দশমিক ৬৫ একর জায়গার ওপর ২০০৬ সালে নির্মিত হয়েছে। নির্মাণের পর রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় স্টেডিয়ামটি খেলাধুলার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সারা দেশে ১২৫টি মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করেছে একই প্রতিষ্ঠান। প্রথম পর্যায়ের এসব স্টেডিয়াম নির্মাণে গড়ে ৫৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।