মুনিয়ার থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাও নিয়েছেন নুসরাত
অনলাইন ডেস্কঃ মোসারাত জাহান মুনিয়ার উচ্ছৃঙ্খল জীবন সম্পর্কে জানতেন বোন নুসরাত জাহান। কলেজপড়ুয়া হওয়ার পরেও কীভাবে লাখ টাকার ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন এনিয়ে জোর কোনো প্রশ্ন তোলেননি বোনের কাছে। উল্টো নিজে ও স্বামীর জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে গুলশানে বাসা ভাড়া করতে সহায়তা করেছিলেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মুনিয়াকে উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন বা বিপথ থেকে ফেরানোর বদলে বোনকে কখনো কখনো প্রশ্রয় দিয়েছেন তিনি। তা না হলে গুলশানে নিজের পরিচয়ে বাসা ভাড়া দিতে যাবেন কেন, এমন প্রশ্ন উঠছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তরফেও।
অভিযোগ রয়েছে, মুনিয়ার কাছ থেকে বিভিন্ন সময় আর্থিক সুযোগ-সুবিধাও নিয়েছেন নুসরাত। এমনকি মৃত্যুর কয়েকদিন আগেও মুনিয়ার কাছে মোটা অংকের টাকা চেয়েছিলেন।
গত ২৬ এপ্রিল রাজধানীর গুলশান-২ নম্বরের ১২০ নম্বর সড়কের এক ফ্ল্যাটে মুনিয়ার লাশ সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পায় পুলিশ। মুনিয়া ঢাকার একটি কলেজে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
পুলিশ জানায়, মুনিয়ার বাড়ি কুমিল্লা শহরে, তার পরিবার সেখানেই থাকে। তিনি এখানে থেকে পড়াশোনা করতেন। ওই ফ্ল্যাটে তিনি একাই থাকতেন।
মামলার তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, তদন্তের প্রয়োজনে মামলার পর বাদী নুসরাত জাহানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। সেখানে তিনি যে তথ্য দিয়েছেন আর তদন্তে যেসব তথ্য মিলছে তার সঙ্গে কিছুটা অসঙ্গতি রয়েছে। তাই তদন্তের স্বার্থে নুসরাতকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হাসান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে মামলাটি তদন্ত করছি। তবে, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এখনো আমাদের হাতে আসেনি। এলে বিস্তারিত জানানো সম্ভব হবে।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্র জানায়, এই মামলার এজাহারের বাইরেও বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাছাড়া ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনটিও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। যদি তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য এবং ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের সঙ্গে গড়মিল থাকে তাহলে এই মামলার ভবিষ্যত কী হবে তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। যদি তদন্ত প্রতিবেদনে আত্মহত্যার বাইরে অন্য কিছু উঠে আসে তাহলে নতুন করে মামলা করতে হবে।
মরদেহ উদ্ধারের ওই রাতেই নুসরাত জাহান গুলশান থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনায় একটি মামলা করেন। পরে ২ মে এ ঘটনায় মুনিয়ার ভাই আশিকুর রহমান সবুজ নাজমুল হক চৌধুরী শারুনের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলার আবেদন করেন। নুসরাতের মামলাটির তদন্ত চলাকালে ভাইয়ের করা মামলাটির তদন্ত কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রথম মামলাটির তদন্ত কাজ শেষ হলে দ্বিতীয় মামলার তদন্ত শুরু হবে।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দ্বিতীয় মামলার তদন্তটিও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ওই মামলায় মুনিয়ার ভাই ভিন্ন অভিযোগ এনেছেন। এটিও খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে।