DoinikAstha Epaper Version
ঢাকাশনিবার ৪ঠা মে ২০২৪
ঢাকাশনিবার ৪ঠা মে ২০২৪

আজকের সর্বশেষ সবখবর

মুমিনের গুণাবলী কেমন হওয়া উচিত?

News Editor
অক্টোবর ৩, ২০২০ ৮:৩৫ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

পবিত্র কুরআনুল কারিমে সুরা মুমিনের শুরুতে আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের সফল বলে আখ্যায়িত করে ইরশাদ করেছেন।

قد أفلح المؤمنون

মুমিনগন সফলকাম হয়ে গেছে।
(সূরা মুমিন-০১)

সফলতার অর্থঃ হলো মানুষের প্রতিটি মনোবাসনা পূর্ণ হওয়া এবং প্রতিটি কষ্ট দূর হয়ে যাওয়া।‌ এই অর্থ থেকে বোঝা যায় যে দুনিয়াতে পূর্ণ সফলতা অর্জিত হওয়া সম্ভব নয়। কেননা দুনিয়া কষ্ট ও‌ শ্রমের আবাসস্থল। এখানে কোন বস্তূর স্থায়িত্ব ও স্থরতা নেই। তাই প্রকৃত ও পরিপূর্ণ সফলতা পাওয়ার স্থান হলো‌ জান্নাত। কেননা জন্নাতে মানুষ তা চাইবে বা কামোনা করবে সেখানে তাকে তাই ই দেওয়া হবে।

পবিত্র কুরআনুল কারীমে সুরা ইয়াসিনে জান্নাতীদের নেয়ামতের আলোচনা করতে গিয়ে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন

لهم فيها فاكهة ولهم ما يدعون

সেথায় (জান্নাতে) জান্নাতীদের জন্য থাকবে ফলমূল এবং তারা তা চাইবে।
(আয়াত নং ৫৭)

আর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন

وقالوا الحمد لله الذي أذهب عنا الحزن إن ربنا لغفور شكور
الذي أحلنا دار المقامة لا يمسنا فيها نصب ولا يمسنا فيها لغوب

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর,যিনি আমাদের দুঃখ দূর করছেন। নিশ্চয়ই আমাদের পালনকর্তা ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী।তিনি স্বীয় অনুগ্রহে আমাদেরকে এমন জায়গায় বসবাসের স্থান দিয়েছেন, যেখানে কোন কষ্ট আমাদের কে স্পর্শ করতে পারবে না এবং পারবে না কোন ক্লান্তি স্পর্শ করতে।
(সূরা ফাতির ৩৪-৩৫)

তাই পূর্ণ সফলতা প্রাপ্তির স্থান হলো জান্নাত । দুনিয়াতে পূর্ণ সফলতা অর্জন করা সম্ভব নয় ।তবে হা দুনিয়াতে আল্লাহ তায়ালা কোন কোন ক্ষেত্রে মানুষকে সফলতা দান করেন।তবে তা আংশিক পূর্ণ নয় ।

আল্লাহ তায়ালা যাদেরকে সফলতা দান করবেন তাদের কিছু গুনের কথা আল্লাহ তায়ালা নিজেই উল্লেখ করে‌ দিয়েছেন‌।নিম্ন আমরা সেগুলো উল্লেখ করব ইনশাআল্লাহ!

আল্লাহ তায়ালা মুমিনের সফলতার এগুনাবলী শুরু ও করেছেন নামাজের মাধ্যমে শেষ ও করেছেন নামাজের মাধ্যমে।এতে বুঝা যায় মুমিনের সফলতার লাভের জন্য নামায হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। আল্লাহ তায়ালা সফল মুমিনের প্রথম গুন আখ্যায়িত করে ইরশাদ করেছেন-

সফল মুমিনের প্রথম গুনঃ

الذين هم في صلاتهم خاشعون

যারা নিজেদের নামাতে বিনয় -নম্র।
(সূরা মুমিন-০২)
(অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন কিছুর কল্পনাকে ইচ্ছাকৃত ভাবে উপস্থিত না করা এবং অঙ্গ-প্রতঙ্গে ওস্থিরতা থাকা অর্থাৎ অনর্থক নড়াচড়া না করা।

সফল মুমিনের দ্বিতীয় গুনঃ

والذين هم عن اللغو معرضون

মারা অনর্থক ক্রিয়াকলাপ থেকে বিরত থাকে ।
(সূরা মুমিন-০৩)

অপর এক আয়াতে আল্লাহ তায়ালার প্রিয় বান্দাদের গুণাবলী উল্লেখ করতে গিয়ে বলেনঃ-

সফল মুমিনের তৃতীয় গুনঃ

و الذين لا يشهدون الزور واذا مروا باللغوا مروا مروا كراما

আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের একটি গুন হলো)তারা কোন মিথ্যা কাজে যোগদান করেন না এবং যখন কোন অনর্থক জিনিষের সম্মুখীন হন তখন আত্মমর্যাদা রক্ষা করে ভদ্রভাবে এড়িয়ে যায়।
(সূরা ফুরকান-৭৩)

সফল মুমিনের চতুর্থ গুন

والذين هم للزكاة فاعلون

আর তারা যাকাতের উপর আমলকারী।
(সূরা মুমিন-০৪)

সফল মুমিনের পঞ্চম গুন

والذين هم لفروجهم حافظون
إلا على أزواجهم أو ما ملكت أيمانهم فإنهم غير ملومين

যারা তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে নিজ স্ত্রী ও বাদীদের ছাড়া অন্য দের থেকে।
(সূরা মুমিন-০৫ এবং ০৬)

নোটঃ
আদিকাল থেকেই বাদী প্রথা ছিল। তাদের সাথে যৌন চাহিদা পূরণ করা ও বৈধ ছিল ।তাই আয়াতে স্ত্রী দের সাথে তাদের কথা ও উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ এসকল লোকেরা বৌধ সম্পর্কের উপরই সীমাবদ্ধ থাকবে।কোন অন্যায় ও অবৈধ পন্থায় যৌন চাহিদা পূরণ করবে না।

অপর এক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয় বান্দাদের গুন বর্ণনায় ইরশাদ করেছেনঃ

والذين لا يدعون مع الله إلها آخر ولا يقتلون النفس التي حرم الله إلا بالحق ولا يزنون ومن يفعل ذلك يلق أثاما

এবং তারা আল্লাহর সাথে অন্য কোন উপাস্যের ইবাদাত করে না , আল্লাহ তায়ালা যার হত্যা অবৈধ করেছেন শরীয়ত সম্মত কারন ব্যতীত তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না।মারা একাজ করে তারা শাস্তির সম্মুখীন হবে।
(সূরা ফুরকান-৬৯)

সফল মুমিনের ষষ্ট ও সপ্তম গুন

والذين هم لأماناتهم وعهدهم راعون

যারা‌ তাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে।
(সূরা মুমিন-০৮)

উপরোক্ত আয়াতে দুটি গুনের কথা উল্লেখ রয়েছে । একটি হলো তাদের কাছে যে আমানত রাখা হয় তারা তা হেফাজত করবেন। আর অন্যটি হলো তার (ওয়াদা)প্রতিশ্রুতি র হেফাজত কারী।কারো সঙ্গে কোন অঙ্গীকার করলে তা ভঙ্গ করে না ।

আরও পড়ুন

সব অবস্থায় কি আল্লাহর জিকির করা যাবে?

সফল মুমিনের অষ্টম গুন

والذين هم على صلواتهم يحافظون

যারা নিজেদের নামাযের সংরক্ষণকারী।
(সূরা মুমিন-০৯)

নোটঃ
নামাযের হেফাজত বা সংরক্ষণ এর মাঝে অনেক বস্তু অন্তর্ভুক্ত আছে ।

এক

তো নামাযের পাবন্ধ, এটা নয় যে তখন খুশি তখন পড়লাম তখন ভাল লাগলো না পড়লাম না। বরং সর্বদাই নামাজের পাবন্ধী করতে হবে।

দুই

তারা নামাযের সময়ের প্রতি পূর্ণ খেয়াল রাখবেন,পবিত্র কুরআনুল কারীমে আল্লাহ এই নামাযগুলোকে বিভিন্ন সময়ের সাথে আবদ্ধ করে রেখেছেন। এবং এই মর্মে ইরশাদ করেছেন-

ان الصلاة كانت على المؤمنين كتاب موقوتا

নির্ধারিত সময়ে সালাত কায়েম করা মুমিনের জন্য আবশ্য কর্তব্য।
(সূরা নিসা আয়াত নং ১০৩)

তিন

নামাযের ফরয, ওয়াজিব , সুন্নাত গুলো প্রতি খেয়াল রেখে আমন করা এবং নিষেধকৃত বিষয় থেকে বিরত থাকা ।

أولئك هم الوارثون
الذين يرثون الفردوس هم فيها خالدون

তারাই তারাই প্রকৃত পক্ষে উত্তরাধিকার লাভ করবে। তারা জান্নাতে (শীতল ছায়ামত উদ্দানের উত্তরাধিকার লাভ করবে। তারা তাতে চিরকাল থাকবে।
(সূরা মুমিন-১০ এবং ১১)

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে উক্ত গুনাবলীতে গুনান্নিত হওয়ার তাওফীক দান করুন

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:০২
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ৬:৩১
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:০৭
  • ১১:৫৯
  • ৪:৩১
  • ৬:৩১
  • ৭:৫০
  • ৫:২৪