DoinikAstha Epaper Version
ঢাকাশুক্রবার ১৭ই মে ২০২৪
ঢাকাশুক্রবার ১৭ই মে ২০২৪

আজকের সর্বশেষ সবখবর

সংগীতাংগনের বেশ জনপ্রিয় একটি নাম, লুৎফর হাসান

News Editor
মে ৩, ২০২১ ৭:৫৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংগীতাংগনের বেশ জনপ্রিয় একটি নাম, লুৎফর হাসান

লুৎফর হাসান। সংগীতাংগনের বেশ জনপ্রিয় একটি নাম। একজন সংগীতশিল্পী হিসেবে যেমন জনপ্রিয় তেমনই জনপ্রিয় একজন গীতিকার ও সুরকার হিসেবে। বরেণ্য এই শিল্পীকে নিয়ে দৈনিক আস্থা’র আজকের এই আয়োজন। সাথেই থাকুন।

জানঃ কেমন আছেন লুৎফর ভাই?

লুৎফরঃ আছি ভালোই। ব্যস্ততার মধ্যে আছি। আপনি কেমন আছেন?

জানঃ আমি ভালোই আছি। সামনে তো ঈদ, ঈদকে নিয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে কী?

লুৎফরঃ ঈদে তো আমার এ্যালবাম আসছে মানে গান আসছে। বৃষ্টির রেলগাড়ী– শিরোনামে একটি গান আসবে আমার আর পুষ্পিতার ডুয়েট। মিউজিক করেছে জন, কথা ও সুর আমারই। ধ্রুব মিউজিক স্টেশন থেকে আসছে  আর একটা গান আসছে রাজন সাহা’র সুরে হোসেন সুমন’এর কথায় স্টুডিও জয়া থেকে।

জানঃ আপনি তো একাধারে একজন গীতিকার সুরকার সংগীত শিল্পী আবৃত্তিকার ও কবি। এ সব বিষয় কীভাবে ব্যবস্থাপনা করেন?

লুৎফরঃ যখন যেটা করার সময় তখন সেটাই করি। গানের সময় গান, লেখার সময় লেখা, আবৃত্তির সময় আবৃত্তি। এভাবেই ম্যানেজিং করি বিষয়গুলো। আমি চাকরিও করি ফুলটাইম ধ্রুব মিউজিক স্টেশনে। তো হয়ে যায় আর কি। কখনো জীবনটাকে খুব ছোট মনে হয় আবার কখনো-বা বড় মনে হয়।

জানঃ  গান শেখা ও লেখার অনুপ্রেরণা কোথায় পেলেন?

লুৎফরঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন পড়তাম সে সময় থেকেই লেখাটা শুরু। বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তাল সময় আমাকে খুব প্রভাবিত করেছিলো। আর শেখাটা তো সেই ছেলেবেলা থেকেই। বিভিন্ন প্রোগ্রামে গান গাইতাম। তারপর যখন ঢাকায় আসি তখন সেই অভিজ্ঞতাগুলোই কাজে লেগে যায়। ঢাকায় আসার পর সোমেশ্বর আলী’র কথায় ঘুড়ি তুমি কার আকাশে ওড়ো শিরোনামে গানটি বের করি। গানটি তখন তুমুল জনপ্রিয় হয়ে গেলো। তো এভাবেই চলছে আজ অব্দি।

জানঃ এমন কেউ কি বিশেষ প্রিয়জন আছে? যাকে ভেবে গান করা হয়?

লুৎফরঃ শুরুর সময়টাতে ছিলো। এখন নেই। সে সময় এমন আবেগ স্বাভাবিক ছিলো। এখন আর হয় না। এখন একটা গান লিখি লেখার জন্যই। আসলে প্রফেশন তো এমনই। এখন একটা গান করার সময় ভাবি গানটা করতে হবে পরে বিক্রি করতে হবে। এখন আর সেই উত্তাল আবেগীয় জীবন বা চিন্তাভাবনা করবার অবকাশ নেই।

জানঃ তা তো অবশ্যই। সময়ের সাথে সাথে অনেক কিছুই বদলে যায়।

লুৎফরঃ হুম।

জানঃ এ পর্যন্ত মোট কতোটি গান বের হয়েছে আপনার?

লুৎফরঃ সাড়ে ছয়শোর বেশী। লেখা সুর ও গাওয়া, সব মিলিয়ে।

জানঃ আপনার সবচেয়ে বেশী হিট হওয়া পাঁচটা গানের নাম বলুন।

লুৎফরঃ সোমেশ্বর আলীর কথায় আমার গাওয়া ঘুড়ি তুমি কার আকাশে ওড়ো। তারপর হচ্ছে, গার্লফেন্ডের বিয়া প্রিতম হাসানের। তারপর, সালমার তোমার বাড়ি আমার বাড়ি মধ্যে চিত্রা নদী। তারপর, রাজীবের আমি একলা মানুষ দোকলা খুঁজি। তারপর আছে, রিংকুর জীবন নদীর উল্টো বাঁকে।

জানঃ শিল্পীদের মধ্যে কাদের সবচেয়ে ভালো ও খারাপ লাগে?

লুৎফরঃ দেখেন, যার গলায় সুর আছে তাকে কখনো খারাপ লাগে না আমার। আর যাদের গলায় সুর নেই তাদের গান না করাই ভালো। আর সবচেয়ে ভালো লাগে জেমস ও হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। উনাদের গান আমি সবচেয়ে বেশী শুনি।

জানঃ অনেকে বলে গীতিকার সর্বোচ্চ সম্নান পাওয়ার অধিকার রাখে কিন্তু বাস্তবতা এমন না। সব দিক থেকেই গীতিকাররা নিগৃহীত– এই ব্যাপারে আপনার কী অভিমত। আপনি কী কখনো এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন?

লুৎফরঃ আমি আসলে ঢাকায় যখন আসি তখন আমি গান লিখতে শুরু করেছিলাম। তো খুব রেগেই কিন্তু আমি গান গাওয়া শুরু করেছি। আমাদের দেশে গীতিকাররা আসলে তৃতীয় চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীতেও নেই। এরা আসলে কোনো লাইনেই নেই। সম্মান ও সম্মানীর কোনোটাই এদের দেওয়া হয় না। নামমাত্র কিছু টাকা দেওয়া হয় আবার অনেকে কোনো টাকাই পায় না। শিল্পী তো কোনোদিন স্বীকার করতে চায় না যে আমার গানটি অমুক লিখেছেন, সুর করেছেন।

জানঃ কেনো এটা?  কী কারণে? অবশ্যই এর পেছনে কোনো না কোনো কারণ আছে।

লুৎফরঃ প্রথম বিশ্বে যারা গান গায় তারা একাধারে তিন কাজ করে। নিজেরাই লেখে নিজেরাই সুর করে নিজেরাই গায়। আবার ভারতের আমরা জাভেদ আখতারকে চিনি গুলজার সাহেবকে চিনি অমিতাভ ভট্টাচার্যকে চিনি।  ভারতের গীতিকারদের আমরা চিনি। কারণ ঐ দেশে সন্তোষ জী কে দেখলাম আমরা কতো সম্মান করে ইন্ডিয়ান আইডলে অতিথি করলো আর আমাদের দেশে শিল্পীরাই সম্মান করে না। যেমন আমি আপনার সাথে কথা বলছি, এখন আমার সামনে একজন গীতিকার বসা। তাঁর গান গেয়ে কতো শিল্পী হিট। অথচ ওরাই তাঁর নাম বলতে লজ্জা পায়।

জানঃ কেনো বলে না? এটা কী মানুষকে অসম্মান করবার  মনমানসিকতার পরিচয়?

লুৎফরঃ হুম। আপনি যেটা বললেন সেটাই।

জানঃ তো এর বিরুদ্ধে কী কোনো ব্যবস্থা নেয়া যায় না?

লুৎফরঃ এটা হবে না। এটা হবে না কেনো? আমি বলি, বাংলাদেশের অধিকাংশ শিল্পীরা আসলে ছোটলোক তো, যতোদিন তারা মনের দিক থেকে বড়লোক না হচ্ছে ততোদিন গীতিকাররা তাদের প্রাপ্য মর্যাদা পাবে না।

জানঃ রাইট। তো আরেকটা বিষয়, যারা নতুন প্রতিভাবান সংগীতশিল্পী তাদের কাছ থেকে একটা দুঃখজনক অভিযোগ শোনা যায় যে, তাদের গান করতে হলে নিজের পকেটের টাকা বিনিয়োগ করে গান করতে হয়। এখন যারা প্রতিভাবান কিন্তু আর্থিকভাবে অসচ্ছল তারা কী করবে?

লুৎফরঃ আমি নতুনদের নিয়ে কাজ করি। বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে এক পয়সাও রাখি না বরং তাদের জীবনে বিশাল বড় ভূমিকা পালন করি। এটুকুই বলবো।

জানঃ বুঝতে পেরেছি। আরেকটা কথা যে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি’র অবস্থা ভালো না। এই বিষয়ে আপনি কী বলবেন? এর আগেও আমি এই প্রশ্নটা অনেকের কাছেই করেছি, আপনার কাছেও পুনরাবৃত্তি করলাম।

লুৎফরঃ কে বলে এই কথা? তোমার যদি যোগ্যতা থাকে তাহলে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি’র অবস্থা খুবই ভালো আর যদি যোগ্যতা না থাকে তাহলে ভালো না। কেনো?  ইমরানের পেছনে কী কোম্পানি লাখ লাখ টাকা খরচ করছে না? সাজিদ সরকার কী অনেক টাকা পেমেন্ট নিয়ে কম্পোজিশন করছে না? যদি ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা খারাপই হয় তাহলে এতো টাকা বিনিয়োগের মানে কোথায়? ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা খুবই ভালো। আসলে আমাদের সবার হতাশাবাদী না হয়ে আশাবাদী হতে হবে।

জানঃ এমন উত্তর আর কারও কাছে পাই নি ভাই। খুবই অর্থবহ কথা বললেন। আপনার পরিবার সম্পর্কে বলুন।

লুৎফরঃ আমার একটা মেয়ে। নাম দুপুর। ক্লাস টুতে পড়ে। ও অনেক কিছুই করে। গান গায় ইউটিউবিং করে।

জানঃ আপনি কতোবার প্রেমে পড়েছেন?

লুৎফরঃ সিরিয়াসলি তিনবার। আর ননসিরিয়াসলি অসংখ্যবার।

জানঃ হা হা হা। সিরিয়াস প্রেম আর ননসিরিয়াস প্রেমের পার্থক্যগুলো কী কী? হা হা হা।

লুৎফরঃ আপনি ট্রেনে কোথাও যাচ্ছেন, সামনের সিটে একজনকে দেখে আপনার ভালো লাগলো, পরের স্টেশনে সে নেমে গেলো। নেমে যাওয়ার সাথে সাথে আপনার ভালোলাগাও নেমে গেলো। এটা ননসিরিয়াস প্রেম। আর আপনি কারও বাসার সামনে ছ্যাবলার মতো দাড়িয়ে আছেন,তার পেছনে ঘুরঘুর করছেন। এটা সিরিয়াস প্রেম।

জানঃ আচ্ছা। বাংলাদেশকে নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কেমন আর বাংলাদেশে ঘটমান কোন বিষয়টা আপনার সবচেয়ে খারাপ লাগে?

লুৎফরঃ সুস্থ বাংলাদেশ চাই। আর সাইবার বুলিং আমি একদমই সহ্য করতে পারি না।

জানঃ শেষ প্রশ্ন। দৈনিক আস্থা’র এই আয়োজন কেমন লাগলো?

লুৎফরঃ খুবই ভালো। এমন আয়োজন আরও হওয়া উচিত।

জানঃ দৈনিক আস্থা ও আমার পক্ষ থেকে আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা।

লুৎফরঃ আপনাকেও। ভালো থাকবেন।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৩:৫০
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ৬:৩৭
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৩:৫৫
  • ১১:৫৮
  • ৪:৩২
  • ৬:৩৭
  • ৮:০০
  • ৫:১৬