ঘুষকে পারিশ্রমিক বলা আক্কেলপুরের সেই শিক্ষা কর্মকর্তাকে বদলি
জয়নাল আবেদীন জয়/জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ
ঘুষকে পারিশ্রমিক মনে করা জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলামকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। গতকাল রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) উপপরিচালক বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই আদেশ জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে শফিকুল ইসলামকে বদলি করা কর্মস্থলে যোগদান করতে হবে। অন্যথায় একই তারিখ অপরাহ্ণে তাৎক্ষণিকভাবে তিনি অবমুক্ত হবেন। এর আগে গত ১৮ অক্টোবর দেশের জাতীয় ও অনলাইন পত্রিকা গুলোতে ‘ঘুষকে পারিশ্রমিক মনে করেন শিক্ষা কর্মকর্তা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
শফিকুল ইসলামকে বদলির বিষয়টা নিশ্চিত করে জয়পুরহাট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শিশির কুমার উপাধ্যায় বলেন, আক্কেলপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নওগাঁর রানীনগরে বদলি করা হয়েছে।
ঘুষকে পারিশ্রমিক মনে করেন শিক্ষা কর্মকর্তাঘুষকে পারিশ্রমিক মনে করেন শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মচারী নিয়োগসহ অন্যান্য কাজে টাকা নিতেন। কর্মচারী নিয়োগেও মোটা অঙ্কের টাকা নিতেন শফিকুল।
এ ছাড়া জাতীয় শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের অনলাইনে এমপিও করতেও তাঁকে টাকা দিতে হতো। শফিকুল ইসলাম অবশ্য ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি স্বীকারও করেছিলেন। তবে তিনি ঘুষের টাকাকে পারিশ্রমিক বা সম্মানী বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন।
শফিকুল ইসলাম গত ৭ মে আক্কেলপুরে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের পর থেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন নিয়োগে ২০ থেকে ৩০ হাজার পর্যন্ত টাকা নিতেন। পরবর্তী সময়ে তাঁদের এবং এনটিআরসিএর নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছ থেকেও এমপিও আবেদন অনলাইনে পাঠাতে জনপ্রতি ২ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন।
আক্কেলপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম অভিযোগ স্বীকার করে দৈনিক আস্থাকে বলেছিলেন, ‘অনলাইনে এমপিও ফাইল পাঠাতে অফিস সময়ের বাইরেও অনেক পরিশ্রম করতে হয়। এটি একপ্রকার পারিশ্রমিক হিসেবে নেওয়া হয়। নিয়োগের সময় প্রতিষ্ঠানে গেলে তাঁরা আমাদের কিছু সম্মানী দেন, যা ঘুষ নয়।’ তবে তিনি কর্মচারী নিয়োগে কোনো টাকা নেন না বলে দাবি করেছিলেন।