DoinikAstha Epaper Version
ঢাকাশুক্রবার ২৭শে জুন ২০২৫
ঢাকাশুক্রবার ২৭শে জুন ২০২৫

আজকের সর্বশেষ সবখবর

মুসলিমদেরকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে ভারত-আলজাজিরার বিশ্লেষণ

Astha Desk
জুন ২৬, ২০২৫ ৬:০১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মুসলিমদেরকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে ভারত-আলজাজিরার বিশ্লেষণ

মোফাজ্জল হোসেন ইলিয়াছ/এস কে সাগরঃ

১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ ভাগ হলে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) জন্ম নেয়। বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রায় ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে, যার প্রায় ২শ ৬০ কিলোমিটার অংশই আসামের সঙ্গে। আসাম সরকার ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চকে নাগরিকত্ব যাচাইয়ের জন্য চূড়ান্ত তারিখ হিসেবে নির্ধারণ করে। এর পরে আগতদের ‘অবৈধ’ বলে বিবেচনা করা হয়।

এই নাগরিকত্ব যাচাইয়ের কাজ করে আসামের ‘ফরেইনার্স ট্রাইব্যুনাল’ নামে বিশেষ আদালতগুলো। নামের বানান বা নথিপত্রে সামান্য ভিন্নতার ভিত্তিতে মানুষকে বিদেশি ঘোষণা করে থাকে এই ট্রাইব্যুনাল। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ২০১৯ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব ট্রাইব্যুনালকে বৈষম্যমূলক ও ইচ্ছামতো কাজ করে বলে জানায়।

সেই বছরেই প্রকাশিত হয় ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেনস (এনআরসি)-এর চূড়ান্ত তালিকা, যেখানে প্রায় ২০ লাখ আসামবাসী বাদ পড়েন, যাদের মধ্যে প্রায় ৭ লাখ মুসলিম। অনেক মুসলিমকে এর পর আটক কেন্দ্রে পাঠানো হয়, যেখান থেকে তাদের জোরপূর্বক বহিষ্কারের চেষ্টা চলছে।

আসামে ধর্মীয় ও জাতিগত দ্বন্দ্ব নতুন নয়। এর শিকড় তৈরি হয়েছে ব্রিটিশ উপনিবেশ আমলেই। ১৯ শতকে ব্রিটিশরা চা-বাগান তৈরির জন্য বিপুলসংখ্যক বাঙালি হিন্দু ও মুসলিমদের শ্রমিক হিসেবে বর্তমান বাংলাদেশের অঞ্চল থেকে নিয়ে আসে। তাই আলজাজিরার বিশ্লেষণ হচ্ছেনমুসলিমদেরই কেবল ‘বিদেশি’ বলে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠাচ্ছে ভারত।

২০১৬ সালে নরেন্দ্র মোদির হিন্দুত্ববাদী বিজেপি দল ক্ষমতায় আসার পর সেই উত্তেজনা আরো বেড়েছে। উল্লেখ্য, আসামের ৩ কোটি ১০ লাখ মানুষের অন্তত এক-তৃতীয়াংশই মুসলিম, যা ভারতের রাজ্যগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ।

৬৭ বছর বয়সী সাইকেল মেকানিক আসামের মোরিগাঁও জেলার কুয়াদল গ্রামের ভাড়া বাসা থেকে ২৩ মে পুলিশ ধরে নিয়ে যায় ঘোষিত বিদেশি নাগরিকদের ধরপাকড় অভিযানের অংশ হিসেবে। আসামে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষদের বিদেশি নাগরিক বলা হয়।

আটকের দিনই আলীকে নিয়ে যাওয়া হয় আসামের গোরালপাড়া জেলার মাতিয়ার একটি আটক কেন্দ্রে, যেটি ভারতের সবচেয়ে বড় ‘অবৈধ’ অভিবাসী আটককেন্দ্র। এর তিন দিন পর ২৭ মে ভোরে, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) আলিসহ ১৩ জনকে (যার মধ্যে পাঁচজন নারী) একটি ভ্যানে করে নিয়ে আসে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে।

বিএসএফ আমাদের জোর করে ওপারে পাঠাতে চাইছিল, অথচ বাংলাদেশের বর্ডার গার্ড ও স্থানীয়রা বলছিল, তারা আমাদের নেবে না কারণ আমরা ভারতীয়। হাঁটুপানিতে কোন খাদ্য বা আশ্রয় ছাড়াই দুই দেশের মাঝে অবস্থান করা ‘নো ম্যানস ল্যান্ডে’ ১২ ঘণ্টা কাটাতে হয় তাদের।

আলী বলেন, নীল আকাশের নিচে আমরা নরক দেখেছি, চোখের সামনে জীবন মুছে যেতে দেখেছি, আমরা বলছিলাম, আমাদের ওদিকে পাঠাবেন না। কিন্তু ওরা গুলি ছুড়েছে। যেন আমাদের কোনো দেশ নেই, কোনো ভূমি নেই।

বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) হস্তক্ষেপ ও স্থানীয়দের বিক্ষোভের পর, চার দিন সীমান্তের ‘নো ম্যানস ল্যান্ডে’ আটকে থাকা আলিকে মেঘালয়ের একটি সীমান্ত পয়েন্টে পৌঁছে দেয় বিজিবি। সেখান থেকে জঙ্গলঘেরা পথ পেরিয়ে তিনি ১০ ঘণ্টার ভ্রমণে নিজ বাড়িতে ফিরে যান।

আলী গত ৩১ মে নিজ বাড়িতে ফিরেছেন, কিন্তু তার চোখে এখনো ভয়। কোনো দেশের নাগরিকত্ব ছাড়াই তিনি চার দিন কাটিয়েছেন বাংলাদেশের সীমান্তে। জন্ম থেকে শুনেছি বাংলাদেশের নাম, কিন্তু কখনো ভাবিনি সেখানে আমাকে জোর করে ঠেলে দেওয়া হবে।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা খোদ রাজ্য বিধানসভায় দাবি করেছেন, মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৩০০-রও বেশি মুসলিমকে বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ করা হয়েছে। এই পুশব্যাক আরো জোরদার করা হবে।

পূর্ব আসামের গোলাঘাট জেলা থেকে ধৃত ৫০ বছর বয়সী রহিমা বেগম বলেন, আমি দৌড়ে বাংলাদেশ অংশে যেতে চাইলে বিজিবি আমাকে পেটায়। ফিরে এলে বিএসএফ বলে, ওদিকে না গেলে গুলি করে মেরে ফেলব। আমার কোনো পালানোর পথ ছিল না।

রৌমারী সীমান্তের বাংলাদেশি সাংবাদিক জিতেন চন্দ্র দাস আলজাজিরাকে জানান, তিনি নিজ চোখে দেখেছেন ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কিভাবে তাদের নাগরিকদের আটক করে রাবার বুলেট ছুড়ে বাংলাদেশ অংশে যেতে বাধ্য করেছে।

তবে ২৭ মে বিএসএফ এক বিবৃতিতে অভিযোগ অস্বীকার করে জানায়, তারা কেবল অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করা বাংলাদেশিদের ঠেকাতে’ কাজ করেছে।

আলজাজিরাকে কয়েকজন মুসলিম জানান, যাদের সীমান্তে পাঠানো হয়েছিল, তাদের মধ্যে অন্তত ১০০ জন নিজেরাই দেশে ফিরে এসেছেন। যদিও এই দাবির স্বাধীন সত্যতা যাচাই সম্ভব হয়নি, তবে প্রত্যাবর্তনকারীরা বলেন, ভারতীয় সীমান্ত থেকে ‘সাদা পোশাকে কিছু লোক’ তাদের গ্রহণ করে একটি মহাসড়কে ফেলে রেখে চলে যায়।

কাশ্মীরের পেহেলগাম শহরে পাকিস্তানসংশ্লিষ্ট বলে দাবি করা বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারতে মুসলিমবিরোধী মনোভাব নতুন করে উসকে ওঠে। সেই ঘটনার পরই ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ পরিচয়ে মুসলিমদের উৎখাতের প্রচেষ্টা আরো গতি পায়।

আরো পড়ুন :  বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীর উপর হামলা

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অপূর্বানন্দ আলজাজিরাকে বলেন, “এই আক্রমণ বিজেপিকে একটি অজুহাত দিয়েছে, যেন তারা রোহিঙ্গা কিংবা বাঙালি মুসলিমদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। বর্তমান বিজেপি সরকারের অধীনে মুসলিম পরিচয় মানেই যেন সন্ত্রাসের প্রতীক। সরকার বাঙালি মুসলিমদের ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ বলে গণ্য করছে।”

আসামের কংগ্রেস নেতা দেবব্রত শইকিয়া বলেন, ‘এই ধরপাকড় কেবল মুসলিমদের টার্গেট করছে। বিশেষ করে মাতিয়ার আটক কেন্দ্র থেকে মুসলিমদেরই বের করে দেওয়া হয়েছে।’

তবে বিজেপির মুখপাত্র মনোজ বড়ুয়া এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘হিন্দুদের বাংলাদেশে পাঠানো হয়নি কারণ তারা একটি মুসলিমপ্রধান দেশে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হতে পারে।’

সংকটের মূল শিকড় আসাম

আলি নামের যিনি প্রথমেই আলোচনায় ছিলেন, তার নাম এনআরসিতে থাকলেও, ২০১৩ সালে মোরিগাঁওর একটি ট্রাইব্যুনাল তাকে ‘বিদেশি’ ঘোষণা করে। কারণ তার বাবার নাম একেক নথিতে ‘’সামত আলী’’, ‘‘চামত আলী’’ ও ‘’চাহমত আলী” এই তিনটি বানানে লেখা ছিল।

এই ভুলে তিনি নাগরিকত্ব হারিয়ে দুই বছর আটক কেন্দ্রে কাটাতে হয় তাকে। রাজ্য হাইকোর্ট ২০১৪ সালে সেই রায় বহাল রাখেন। দরিদ্র আলী জানিয়েছেন, তার পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া সম্ভব নয়।

‘তারা আমাকে বাংলাদেশি বানিয়ে দিল’

ভারতের আসামে চলমান ‘বিদেশি তাড়ানোর অভিযানে’ বহু মুসলমানকেই বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, যাঁদের অনেকের নাগরিকত্ব সম্পর্কিত মামলা এখনো আদালতে বিচারাধীন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি এক ধরনের বেআইনি এবং স্বেচ্ছাচারী অভিযান।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাও স্বীকার করেছেন যে, যাদের মামলা এখনো আদালতে চলমান, তাদের মধ্যে কিছু মানুষকে বাংলাদেশ থেকে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

গোলাঘাটের বাসিন্দা রহিমা বেগম (৫০) বলেন, এই দেশ আমার, কিন্তু আমি এই দেশের নই।
বরপেটা জেলার বুড়িখামার গ্রামের সোনা বানু (৫৯) ২৭ মে বাংলাদেশ সীমান্তে পুশব্যাকের শিকার হন।

মরিগাঁও জেলার মিকিরভেটা গ্রামের এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক খৈরুল ইসলাম জানান, ব্রিটিশ আমল থেকে পারিবারিক জমির দলিলসহ বহু প্রমাণপত্র দেখানোর পরও তাকে বাংলাদেশে জোর করে পাঠানো হয়েছিল। ২০১৬ সালে তাকে ‘বিদেশি’ ঘোষণা করা হয়, যার বিরুদ্ধে তিনি সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছেন।

গোলাঘাট জেলার ট্রাকচালক নিজাম আহমেদ এনআরসি-তে নাম থাকা সত্ত্বেও সীমান্তে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তার ছেলে জাহিদ বলেন, ‘আমার দাদা আসাম পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্য ছিলেন। তবু আমার বাবাকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে!

আলজাজিরা নিশ্চিত করেছে, তার দাদা সালিম উদ্দিন আহমেদ ১৯৬০ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত রাজ্য পুলিশের সদস্য ছিলেন।

স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে গুজরাটের আহমেদাবাদ শহরে অন্তত ২শ ৫০ জন ‘বাংলাদেশি’ চিহ্নিত করে পুলিশ তাদের বিতাড়ণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। মহারাষ্ট্রে ৭ মুসলিমকে গ্রেপ্তার করে বিএসএফের হাতে তুলে দেওয়া হয়, যদিও তারা পশ্চিমবঙ্গের নাগরিক। পরে পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তাদের ফেরত নেওয়া হয়।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, শুধু বাংলা বলার কারণে তাদের বাংলাদেশি বানানো হয়েছিল।

মুর্শিদাবাদের মিরানুল শেখ বলেন, আমরা চিৎকার করেও বলেছি আমরা ভারতের নাগরিক, কিন্তু বিএসএফ আমাদের মারতে মারতে বলল, ফিরে এলে গুলি করব।

গোলাঘাট জেলার নোয়াজান গ্রামের আব্দুল হানিফকে ২৫ মে বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া হয়।
তার ভাই দিন ইসলাম জানায়, তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তিনি শুধু ‘মিয়া’ সম্প্রদায়ের মানুষ বলেই তাকে সন্দেহভাজন হিসেবে ধরে নেওয়া হয়েছে। ‘মিয়া’ শব্দটি আসামে বাঙালি মুসলিমদের অপমানসূচক উপাধি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

হানিফের সঙ্গে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে থাকা স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, তাদের দলকে দুই ভাগে ভাগ করে বাংলাদেশ সীমান্তে পাঠানো হয়েছিল। যার মধ্যে হানিফ এখন নিখোঁজ।
আলজাজিরা নিশ্চিত করেছে, গত মাসে যারা পুশব্যাকের শিকার হয়েছেন, তাদের মধ্যে অন্তত ১০ জনের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

নিজের দেশে পরবাসী

আসামের সমসুল আলীর ছেলে বক্কর আলী বলেন, আমরা ভেবেছিলাম দেশি মুসলিম মানেই নিরাপদ, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে কোনো মুসলিমই নিরাপদ নয়।

বিশ্লেষক অংশুমান চৌধুরী বলেন, এটি কোনো পুশব্যাক নয়, এটি জোরপূর্বক বহিষ্কার। কাউকে তুলে নিয়ে সীমান্তে ফেলে দেওয়া আন্তর্জাতিকভাবে বেআইনি।

আসামের মানবাধিকারকর্মী আইনজীবী ওলিউল্লাহ লস্কর জানান, ১৯৫০ সালের যেসব আইন উল্লেখ করে সরকার এ কাজ করছে, তা শুধুই অনুপ্রবেশকারীদের জন্য প্রযোজ্য যারা দীর্ঘদিন ধরেই আসামে বসবাস করছে ও সরকারি কাগজপত্রে নাম রয়েছে, তাদের জন্য নয়। সুপ্রিম কোর্টেও রাজ্য সরকার বলেছে, কারো যদি বাংলাদেশে ঠিকানা জানা না থাকে, তবে তাকে ফেরত পাঠানো সম্ভব নয়।

এদিকে ২০১৯ সালের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে শুধু অমুসলিমদের জন্য দ্রুত নাগরিকত্ব পাওয়ার সুবিধা রয়েছে। ফলে মুসলমানদের ক্ষেত্রে বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৩:৪২
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৮:৫৩
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৩:৪৭
  • ১২:০৪
  • ১৬:৪১
  • ১৮:৫৩
  • ২০:২০
  • ৫:১২