ঢাকা ০২:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫, ১৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
Logo পাহাড়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বাড়াতে টার্গেট সেনাবাহিনী Logo খাগড়াছড়িতে সেনা ক্যাম্প স্থাপনে বাধা প্রদানের প্রতিবাদে ঢাবিতে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিল Logo একটি স্নাইপার বুলেটই যথেষ্ট: বাঙালি নেতাকে কেএনএফ-এর হুমকি! Logo খাগড়াছড়িতে নাশকতার পরিকল্পনা করছে ইউপিডিএফ Logo সামনে ঘোর অন্ধকার-আমরা ঘুমাচ্ছি Logo খাগড়াছড়িতে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে যুবদলের প্রতিষ্ঠা বাষিকী পালিত Logo কিশোরগঞ্জে ৫ দফা দাবিতে জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল Logo হোসেনপুরে পুলিশের হাত থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিল বিএনপি নেতারা Logo কিশোরগঞ্জ শহরে অটোরিকশার যানজট ও ফুটপাত দখল ভাঙতে মাঠে নামলেন ডিসি ফৌজিয়া খান Logo রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাসিম আকনের মৃত্যুতে মহাসচিব মির্জা ফখরুলের শোক

ইটিআইএম’কে সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ দিল যুক্তরাষ্ট্র

News Editor
  • আপডেট সময় : ০৬:২৯:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ নভেম্বর ২০২০
  • / ১০৯১ বার পড়া হয়েছে

ইটিআইএমকে সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ দিল যুক্তরাষ্ট্র। ইস্ট তুর্কিস্তান ইসলামি মুভমেন্টকে (ইটিআইএম) সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জিনজিয়ানে সংখ্যালঘু মুসলমানদের ওপর চীনের চালানো ভয়াবহ নৃশংসতাকে ন্যায্যতা দিতে ইটিআইএম’কে বরাবরই দোষারোপ করে আসছে বেইজিং।

মার্কিন ফেডারেল রেজিস্টার নতুন একটি নোটিশ জারি করেছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নতুন নিয়মনীতি তুলে ধরা হয়। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ইটিআইএম’কে সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ইটিআইএম’কে সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। কারণ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তাদের অস্তিত্বের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

মার্কিন নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের অংশ হিসেবে এবং চীনবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে ২০০৪ সালে জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রশাসন ইটিআইএম ছাড়াও তুর্কিস্তান ইসলামিক পার্টিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছিল।

জিনজিয়ানে চীনের বর্বরতার পক্ষে সাফাই দেয়ার জন্য বরাবরই ইটিআইএমকে দোষারোপ করছে বেইজিং। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, জিনজিয়ানের আটক কেন্দ্রে ১০ লাখের বেশি মানুষকে বন্দি করেছে শি জিনপিং প্রশাসন। যাদের অধিকাংশ সংখ্যালঘু উইঘুর এবং তুর্কি ভাষি মুসলমান।

জিনজিয়ানকে পূর্ব তুর্কিস্তান বলে ইটিআইএম-এর সদস্যরা। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, চীন কিছু প্রমাণ হাজির করেছে। যাতে বলা হয়েছে ইটিআইএম একটি সংঘবদ্ধগোষ্ঠী। জিনিজিয়ানে হামলার জন্য তাদের দায়ী করা হয়।

ওয়াশিংটন ভিত্তিক উইঘুর হিউম্যান রাইটস প্রজেক্ট মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত ‘বিলম্বিত সফলতা’ আখ্যা দিয়েছে। বলেছে, ইটিআইএমের বিরুদ্ধে চীনের তোলা অভিযোগ সরাসরি প্রত্যখ্যান মার্কিন এ সিদ্ধান্ত।

প্রেসিডেন্ট পদের আরও কাছে পৌঁছলেন জো বাইডেন

সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক ওমের ক্যানাত বলেন, ইটিআইএম-এর কাল্পনিক হুমকি মোকাবিলার দোহাই দিয়ে গেল ২০ বছর ধরে উইঘুরদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে চীনা কর্তৃপক্ষ।

মার্কিন সিদ্ধান্তে তীব্র নাখোশ এবং কঠোর বিরোধিতা করেছে চীন। শুক্রবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদবিরোধী লড়াইয়ে সহায়তা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে পিছু না হটার আহ্বান জানান।

জিনজিয়ানে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় চীন কয়েক দশক চেষ্টা করেছে। এর অংশ হিসেবে উইঘুরদের বিরুদ্ধে নৃশংতা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে হামলার ঘটনা ঘটে। তারপর থেকে কথিত সন্ত্রাসবাদের জন্য ধর্মীয় কঠোর অনুশাসনকে দায়ী করতে থাকে ওয়াশিংটন। বলা হয়, উইঘুরের তরুণ চরম উগ্রপন্থার দিকে ঝুঁকছে।

‘শতাব্দীর কলঙ্ক’

সন্ত্রাসী হামলায় ইটিআইএম’র ভূমিকা নিয়ে বিশ্লেষকরা সন্দিহান। চীন ধারাবাহিকভাবে কয়েকটি হামলার শিকার হয়েছে। যার জন্য উইঘুরের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দায়ী করছে চীনা কর্তৃপক্ষ।

২০১৪ সালে দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় শহর কুমিংয়ে ট্রেনে ছুরি হামলায় ৩১ যাত্রী নিহত হয়। জিনজিয়ানের উরুমকিতে ২০০৯ সালে সংখ্যাগরিষ্ঠ হানগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে শুরু হওয়া দাঙ্গায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, চীনা কর্তৃপক্ষ উইঘুরদের ইসলামি রীতিনীতি ত্যাগে বাধ্য করছে। তাদেরকে জোরপূর্বক সমাজতন্ত্রের দীক্ষা দেয়া হচ্ছে। 

এর আগে পম্পেও চীনের গণগ্রেফতারকে ‘শতাব্দীর কলঙ্ক’ বলে আখ্যা দেন। উইঘুরদের বিরুদ্ধে চীনা বর্বরতাকে গণহত্যা আখ্যা দেয়ার দাবিও জানান বেশ কয়েকজন মার্কিন সিনেটর।

ইটিআইএম’কে সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ দিল যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট সময় : ০৬:২৯:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ নভেম্বর ২০২০

ইটিআইএমকে সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ দিল যুক্তরাষ্ট্র। ইস্ট তুর্কিস্তান ইসলামি মুভমেন্টকে (ইটিআইএম) সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জিনজিয়ানে সংখ্যালঘু মুসলমানদের ওপর চীনের চালানো ভয়াবহ নৃশংসতাকে ন্যায্যতা দিতে ইটিআইএম’কে বরাবরই দোষারোপ করে আসছে বেইজিং।

মার্কিন ফেডারেল রেজিস্টার নতুন একটি নোটিশ জারি করেছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নতুন নিয়মনীতি তুলে ধরা হয়। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ইটিআইএম’কে সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ইটিআইএম’কে সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। কারণ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তাদের অস্তিত্বের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

মার্কিন নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের অংশ হিসেবে এবং চীনবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে ২০০৪ সালে জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রশাসন ইটিআইএম ছাড়াও তুর্কিস্তান ইসলামিক পার্টিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছিল।

জিনজিয়ানে চীনের বর্বরতার পক্ষে সাফাই দেয়ার জন্য বরাবরই ইটিআইএমকে দোষারোপ করছে বেইজিং। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, জিনজিয়ানের আটক কেন্দ্রে ১০ লাখের বেশি মানুষকে বন্দি করেছে শি জিনপিং প্রশাসন। যাদের অধিকাংশ সংখ্যালঘু উইঘুর এবং তুর্কি ভাষি মুসলমান।

জিনজিয়ানকে পূর্ব তুর্কিস্তান বলে ইটিআইএম-এর সদস্যরা। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, চীন কিছু প্রমাণ হাজির করেছে। যাতে বলা হয়েছে ইটিআইএম একটি সংঘবদ্ধগোষ্ঠী। জিনিজিয়ানে হামলার জন্য তাদের দায়ী করা হয়।

ওয়াশিংটন ভিত্তিক উইঘুর হিউম্যান রাইটস প্রজেক্ট মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত ‘বিলম্বিত সফলতা’ আখ্যা দিয়েছে। বলেছে, ইটিআইএমের বিরুদ্ধে চীনের তোলা অভিযোগ সরাসরি প্রত্যখ্যান মার্কিন এ সিদ্ধান্ত।

প্রেসিডেন্ট পদের আরও কাছে পৌঁছলেন জো বাইডেন

সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক ওমের ক্যানাত বলেন, ইটিআইএম-এর কাল্পনিক হুমকি মোকাবিলার দোহাই দিয়ে গেল ২০ বছর ধরে উইঘুরদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে চীনা কর্তৃপক্ষ।

মার্কিন সিদ্ধান্তে তীব্র নাখোশ এবং কঠোর বিরোধিতা করেছে চীন। শুক্রবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদবিরোধী লড়াইয়ে সহায়তা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে পিছু না হটার আহ্বান জানান।

জিনজিয়ানে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় চীন কয়েক দশক চেষ্টা করেছে। এর অংশ হিসেবে উইঘুরদের বিরুদ্ধে নৃশংতা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে হামলার ঘটনা ঘটে। তারপর থেকে কথিত সন্ত্রাসবাদের জন্য ধর্মীয় কঠোর অনুশাসনকে দায়ী করতে থাকে ওয়াশিংটন। বলা হয়, উইঘুরের তরুণ চরম উগ্রপন্থার দিকে ঝুঁকছে।

‘শতাব্দীর কলঙ্ক’

সন্ত্রাসী হামলায় ইটিআইএম’র ভূমিকা নিয়ে বিশ্লেষকরা সন্দিহান। চীন ধারাবাহিকভাবে কয়েকটি হামলার শিকার হয়েছে। যার জন্য উইঘুরের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দায়ী করছে চীনা কর্তৃপক্ষ।

২০১৪ সালে দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় শহর কুমিংয়ে ট্রেনে ছুরি হামলায় ৩১ যাত্রী নিহত হয়। জিনজিয়ানের উরুমকিতে ২০০৯ সালে সংখ্যাগরিষ্ঠ হানগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে শুরু হওয়া দাঙ্গায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, চীনা কর্তৃপক্ষ উইঘুরদের ইসলামি রীতিনীতি ত্যাগে বাধ্য করছে। তাদেরকে জোরপূর্বক সমাজতন্ত্রের দীক্ষা দেয়া হচ্ছে। 

এর আগে পম্পেও চীনের গণগ্রেফতারকে ‘শতাব্দীর কলঙ্ক’ বলে আখ্যা দেন। উইঘুরদের বিরুদ্ধে চীনা বর্বরতাকে গণহত্যা আখ্যা দেয়ার দাবিও জানান বেশ কয়েকজন মার্কিন সিনেটর।