ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা ও অনুভূতিহীন কর্তৃপক্ষ
- আপডেট সময় : ০৫:৩১:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
- / ১১৭৪ বার পড়া হয়েছে
ছবি দৈনিক আস্থা
মিয়া সুলেমান: দেশজুড়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান কর্মবিরতি এখন জাতীয় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বছরের শেষ প্রান্তে এসে যখন শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত থাকার কথা, তখন শ্রেণিকক্ষগুলো বন্ধ হয়ে আছে। এই অচলাবস্থায় সবচেয়ে বড় ক্ষতির মুখে পড়ছে শিক্ষার্থীরাই—যাদের ভবিষ্যৎ গঠনের সময়টা এখন অনিশ্চয়তায় নিমজ্জিত।
অন্যদিকে, রাস্তায় আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষকরা মানবেতর কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। রোদ-বৃষ্টি-ভোগান্তির মধ্যেও তারা ন্যায্য দাবি আদায়ে অনড় রয়েছেন। কিন্তু এই আন্দোলনের ফলে সাধারণ মানুষও পড়েছে চরম ভোগান্তিতে—যানজট, জনদুর্ভোগ ও নিরাপত্তাহীনতা বেড়েছে।
সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো, এই জটিল পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলেও সরকারের পক্ষ থেকে, বিশেষ করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দিক থেকে এখনো কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। শিক্ষকদের দাবিগুলো যদি আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান করা যেত, তবে এত বড় শিক্ষা সংকটের সৃষ্টি হতো না।
রাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত শিক্ষা। তাই এ খাতে অচলাবস্থা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সরকারের উচিত হবে দ্রুত আলোচনায় বসে একটি টেকসই সমাধান বের করা—যাতে শিক্ষকরা তাদের প্রাপ্য অধিকার পান, শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষাজীবনে ফেরে, আর দেশ এগিয়ে চলে জ্ঞানের আলোয়।
শিক্ষক সমাজের উচিত হবে শান্তিপূর্ণ ও বিকল্প প্রতিবাদের পথ বেছে নেওয়া—যাতে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা কম ভোগান্তিতে থাকে, কিন্তু তাদের দাবি-দাওয়াও যথাযথভাবে সরকারের কাছে পৌঁছায়।
গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের ভাবা উচিত যে শিক্ষা সংকট কোনো এক পক্ষের সমস্যা নয়; এটি জাতির সমস্যা। তাই গণমাধ্যম, শিক্ষা বিশারদ ও নাগরিক সমাজকে মধ্যস্থতার ভূমিকা নিয়ে আলোচনার পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
সমস্যা যত জটিলই হোক, সংলাপই এর একমাত্র স্থায়ী সমাধান। সরকার ও শিক্ষক সমাজ উভয়ের উচিত নিজেদের অবস্থান থেকে এক ধাপ এগিয়ে আসা—যাতে শিক্ষা ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়, শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে আসে, এবং জাতির মেধাভিত্তি অক্ষুণ্ণ থাকে।




















