DoinikAstha Epaper Version
ঢাকাশুক্রবার ২৬শে এপ্রিল ২০২৪
ঢাকাশুক্রবার ২৬শে এপ্রিল ২০২৪

আজকের সর্বশেষ সবখবর

গরু নেই, ঘানি টেনে সংসার চলে দম্পতির

News Editor
অক্টোবর ১২, ২০২০ ৭:৫১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সুজন মির্জা (সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি): আধুনিকতা আর যান্ত্রিক সভ্যতার কারণে সবই পাল্টে গেছে। বাংলার আবহমান সাংস্কৃতিক অনেক কিছুই বিলপ্তির পথে। ৩০/৪০ বছর আগে গরু দিয়ে ঘানিতে টেনে উৎপাদন করা হতো খাঁটি তেল। তেল তৈরির আধুনিক যন্ত্রের বিস্তারে সেই আদি পদ্ধতির পেশা এখন বলা চলে বিলুপ্তির পথে। তারপরও পৈত্রিক পেশা আঁকড়ে ধরে আছেন কেউ কেউ।

সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের বিলধলী গ্রামের বাসিন্দা মোছা. মরিয়ম বেগম (৪৫) তার স্বামী লোকমান হোসেন (৫৫) কে নিয়ে বিয়ের ১ মাস পরে থেকেই ৩০ বছর ধরে এ ঘানি টানছেন। দুটি ঘানি থেকে যে টাকা পান তা দিয়েই কোন রকমে চলে তিন ছেলে আর এক মেয়েকে নিয়ে সংসার। তবে দুইটি ঘানি টানতে দুটি গরুর প্রয়োজন হলেও একটি ঘানি টানার জন্য গরু কেনার টাকা নেই তাদের। তাই গরুর পরিবর্তে ঘানি টানা জোয়াল নিজেরাই টেনে অভাবের সংসার চালাচ্ছেন তারা।

সংগ্রামী নারী মোছা. মরিয়ম বেগম জানান, বিয়ের পর থেকেই দেখে আসছি আমার শ্বশুর ও স্বামী এই ঘানি টেনেই সংসার চালাচ্ছেন। আমি এ বাড়িতে আসার পর থেকেই এ কাজে নিয়েজিত। প্রথম অবস্থায় খুব খারাপ লাগতো মাথা ঘুরতো। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতাম আবার ঘানি টানতাম। এই ঘানি টানছি প্রায় ৩০ বছর ধরে। ঘানি টানার কারণে আমার কিডনির সমস্যা হয়েছে। ডাক্তার ভাড়ি কাজ করতে নিষেধ করেছে। তারপরেও বাধ্য হয়ে ঘানি টানছি। ঘানি টেনে যে টাকা পায় তা দিয়েই টেনেটুনে সংসার চালাচ্ছি। আর ঘানি যদি না টানি তাহলে সংসার চলবে না। এদিকে নিজের ঔষধ ও স্বামীর ঔষধও কিনতে পারবো না।

কেউ যদি আমাকে আর্থিকভাবে সাহায্য সহযোগিতা করতেন অথবা দুটি বলদ বা বড় গরু কিনে দিতেন তাহলে খুব উপকার হতো।

মরিয়মের স্বামী লোকমান হোসেন প্রামাণিক (৫৫) বলেন, অনেক কষ্টে আছি। নিজে অসুস্থ আবার আমার স্ত্রীও অসুস্থ। আমাদের দুটি ঘানি আছে একটি ঘানি গর দিয়ে টানি অন্যটি আমি আমার স্ত্রী ও ছেলেকে দিয়ে টানাই। ঘানি টেনে সরিষা থেকে যে তেল বের হয় তা বিক্রয় করে যেটা আয় হয় তা দিয়ে নিজের ঔষধ স্ত্রীর ঔষধ কিনি আর টেনেটুনে সংসার চালাই। ঘানি না টানলে খাবো কি? ঘানি টানার জন্য ভালোমানের বলদ গরু কেনার প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের সে স্বামর্থ নেই। আবার কাজও করতে পারছি না। যদি কেউ আমাদের প্রতি সদয় হতেন?

তিনি আরও বলেন, এই পেশা আমার বাপ দাদার আমলের। বাবা বলেছে হালাল খাওয়ার জন্য এই পেশায় থাকতে। কোনদিন হারাম খাবি না যার জন্য এই পেশায় এখনো আছি।

এদিকে প্রতিদিন প্রায় এক মণ সরিষা ঘানির মাধ্যমে তেল তৈরি হয় ১০-১৫ কেজি। প্রতি কেজি বিক্রয় হয় ২২০-২৫০ টাকা। বিশুদ্ধতার নিশ্চয়তা থাকায় ক্রেতারা এখান থেকেই তেল ক্রয় করছেন বলেও জানা যায়।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:০৮
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ৬:২৮
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:১৩
  • ১২:০০
  • ৪:৩১
  • ৬:২৮
  • ৭:৪৭
  • ৫:২৮