DoinikAstha Epaper Version
ঢাকারবিবার ৫ই মে ২০২৪
ঢাকারবিবার ৫ই মে ২০২৪

আজকের সর্বশেষ সবখবর

জুমার দিন যে সময় দুআ কবুল হয়

মাওলানা মুহাম্মাদ ইমরান হুসাইন
সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩ ৬:১৪ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

দুআর মাধ্যমে বান্দার আবদিয়্যাত গুণের প্রকাশ ঘটে। দুআ হল আল্লাহর সামনে বান্দার সমর্পণবান্দার হীনতা ও দীনতার প্রকাশআল্লাহমুখিতা এবং আল্লাহ ও বান্দার মাঝে বিশেষ সম্পর্কের উত্তম বহিঃপ্রকাশ। আর এসব বিষয় হল ইবাদত ও আবদিয়্যাতের রূহ ও প্রাণ। তাই দুআ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।

নুমান ইবনে বাশীর রা. বলেনআল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

الدُّعَاءُ هُوَ الْعِبَادَةُ.

দুআই ইবাদত।

এরপর এর সমর্থনে তিনি এই আয়াত তিলাওয়াত করেছেন- 

وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُوْنِیْۤ اَسْتَجِبْ لَكُمْ اِنَّ الَّذِیْنَ یَسْتَكْبِرُوْنَ عَنْ عِبَادَتِیْ سَیَدْخُلُوْنَ جَهَنَّمَ دٰخِرِیْنَ.

তোমাদের প্রতিপালক বলেছেনআমাকে ডাক। আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। নিশ্চয়ই অহংকারবশে যারা আমার ইবাদত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়তারা লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। [সূরা মুমিন (৪০) : ৬০] -জামে তিরমিযীহাদীস ২৯৬৯সুনানে আবু দাউদহাদীস ১৪৭৯সুনানে ইবনে মাজাহহাদীস ৩৮২৮

যে দুআ করে আল্লাহ তার প্রতি খুশি হনআর যে দুআ করে না আল্লাহ তার প্রতি নারায হন।

আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিতআল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

مَنْ لَمْ يَسْأَلِ اللهَ يَغْضَبْ عَلَيْهِ.

যে আল্লাহর কাছে চায় নাআল্লাহ তাআলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন। -জামে তিরমিযীহাদীস ৩৩৭৩মুসনাদে আহমাদহাদীস ৯৭০১আলআদাবুল মুফরাদহাদীস ৬৫৮

ইবনে আবদুল বার রাহ. বলেছেন-

وَالدّعَاءُ رَأْسُ الْعِبَادَةِ وَاللهُ يُحِبُّ أَنْ يُسْأَلَ،وَقَدْ أَمَرَ أَنْ يُسْأَلَ مِنْ فَضْلِهِ لِقَوْلِهِ عَزّ وَجَلّ وَسْـَٔلُوا اللهَ مِنْ فَضْلِهٖ.

দুআ ইবাদতের মূল। আল্লাহ তাআলা তাঁর কাছে প্রার্থনা করা পছন্দ করেন। তাই তিনি ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) তোমরা আল্লাহর কাছে তাঁর অনুগ্রহ প্রার্থনা করো। [সূরা নিসা (৪) : ৩২] -আলইসতিযকার ৮/১৪৪

যদি রিযিক হালাল হয় এবং গোনাহ বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার দুআ না করা হয়তাহলে সে দুআ অবশ্যই কবুল হয়। এ সম্পর্কে আল্লাহর প্রতিশ্রুতি রয়েছে। ইরশাদ হয়েছে-

وَاِذَا سَاَلَكَ عِبَادِیْ عَنِّیْ فَاِنِّیْ قَرِیْبٌ اُجِیْبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ اِذَا دَعَانِ فَلْیَسْتَجِیْبُوْا لِیْ وَ لْیُؤْمِنُوْا بِیْ لَعَلَّهُمْ یَرْشُدُوْنَ.

(হে নবী!) আমার বান্দাগণ যখন আপনার কাছে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে তখন (আপনি তাদেরকে বলুন,) আমি এত নিকটবর্তী যেকেউ  যখন  আমাকে  ডাকে  আমি  তার  ডাক শুনি। সুতরাং তারাও আমার কথা অন্তর দিয়ে গ্রহণ করুক এবং আমার প্রতি ঈমান আনুকযাতে তারা সঠিক পথে এসে যায়। -সূরা বাকারা (২) : ১৮৬

আল্লাহ তাআলা দুআ কবুল করার ওয়াদা করেছেন। সব সময় সব হালতেই তিনি দুআ কবুল করেন। তবে হাদীস শরীফে বিশেষভাবে জুমার দিনের একটি সময়ের কথা বলা হয়েছেবান্দা তখন আল্লাহর কাছে যা চাইবে আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তা দান করবেন। আবু হুরায়রা রা. বলেন- 

أَنّ رَسُولَ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ ذَكَرَ يَوْمَ الجُمُعَةِ، فَقَالَ: >فِيهِ سَاعَةٌ، لاَ يُوَافِقُهَا عَبْدٌ مُسْلِمٌ، وَهُوَ قَائِمٌ يُصَلِّي، يَسْأَلُ اللهَ تَعَالَى شَيْئًا، إِلّا أَعْطَاهُ إِيّاهُوَأَشَارَ بِيَدِهِ يُقَلِّلُهَا.

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন জুমার দিনের আলোচনা করলেন। তিনি বললেনএইদিন একটা সময় আছে তখন কোনো মুসলিম নামাযরত অবস্থায় আল্লাহর নিকট যা চাইবে আল্লাহ তাকে অবশ্যই তা দেবেন।

(আবু হুরায়রা রা. বলেন,) এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাত দিয়ে ইশারা করেছেনঐ মুহূর্তটা অতি অল্প সময়। -সহীহ বুখারীহাদীস ৯৩৫সহীহ মুসলিমহাদীস ৮৫২

মুসলিম শরীফের এক বর্ণনায় স্পষ্ট এসেছে-

وَهِيَ سَاعَةٌ خَفِيفَةٌ.

সে মুহূর্তটি খুব সামান্য সময়। -সহীহ মুসলিমহাদীস ৮৫২

জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রা. বলেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

يَوْمُ الْجُمُعَةِ اثْنَتَا عَشْرَةَ سَاعَةً، وَلَا يُوجَدُ عَبْدٌ مُسْلِمٌ يَسْأَلُ اللهَ شَيْئًا إِلّا آتَاهُ اللهُ، فَالْتَمِسُوهَا آخِرَ السّاعَةِ بَعْدَ الْعَصْرِ.

জুমার দিন বারো ভাগ। (এর মধ্যে একটি সময় আছেযাতে) কোনো মুসলিম বান্দা আল্লাহ তাআলার কাছে যা প্রার্থনা করবে আল্লাহ তাআলা নিশ্চয় তা দান করবেন। সে সময়টি তোমরা অনুসন্ধান কর আসরের পর দিনের শেষ অংশটিতে। -মুস্তাদরাকে হাকেমহাদীস ১০৩২সুনানে আবু দাউদহাদীস ১০৪৮সুনানে নাসায়ীহাদীস ১৩৮৯১

সেই মুহূর্ত কোনটি?

উপরের হাদীসগুলো থেকে জানা গেলজুমার দিন একটি সময় বান্দার দুআ অবশ্যই কবুল হয়। সেই ফযীলতপূর্ণ সময়টা কখনজুমার দিনের যে সময়টিতে দুআ কবুলের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে সেটা কোন্ সময়এ সম্পর্কে সাহাবাতাবেঈন ও পরবর্তী উলামায়ে কেরামের একাধিক বক্তব্য পাওয়া যায়।

হাফেয ইবনে হাজার রাহ. লেখেন-

وَلَا شَكّ أَنّ أَرْجَحَ الْأَقْوَالِ الْمَذْكُورَةِ حَدِيثُ أَبِي مُوسَى وَحَدِيثُ عَبْدِ اللهِ بْنِ سَلَامٍ.

এতে কোনো সন্দেহ নেই যেএসব মতের মধ্যে সবচেয়ে অগ্রগণ্য মত হল- আবু মূসা আশআরী রা. ও আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রা.-এর হাদীসে উল্লেখিত দুটি মত। -ফাতহুল বারী ২/৪৮৮

ইবনে হাজার আসকালানী রাহ.-এর বক্তব্য থেকে জানা গেলজুমার দিনের সেই বিশেষ সময়টি সম্পর্কে যত মত আছে এর মধ্যে অগ্রগণ্য হল দুটি :

এক. যে সময়ের কথা পাওয়া যায় আবু মূসা আশআরী রা.-এর হাদীসে। সেই হাদীসে এসেছেজুমার দিনের দুআ কবুলের সময় হলখতীব (খুতবার জন্য) মিম্বরে বসার পর থেকে নামায শেষ করা পর্যন্ত।

আবু বুরদা রাহ. বলেনআবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. আমাকে জিজ্ঞেস করলেনজুমার দিনের দুআ কবুলের সময় সম্পর্কে আপনার পিতা আবু মূসা আশআরী রা.-এর কাছ থেকে কোনো হাদীস শুনেছেন?

আমি বললামহাঁশুনেছি। তাঁকে বলতে শুনেছিরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

هِيَ مَا بَيْنَ أَنْ يَجْلِسَ الْإِمَامُ إِلَى أَنْ تُقْضَى الصّلَاةُ.

সে সময়টি হলখতীব (খুতবার জন্য মিম্বরে) বসার পর থেকে জুমার নামায শেষ করা পর্যন্ত। -সহীহ মুসলিমহাদীস ৮৫৩সুনানে আবু দাউদহাদীস ১০৪৯সহীহ ইবনে খুযায়মাহাদীস ১৭৩৯

দুই. যে সময়ের কথা পাওয়া যায় আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রা.-এর হাদীসে। সেখানে এসেছে,  দুআ কবুলের বিশেষ সময়টি হলআসরের পর সূর্য অস্তমিত হওয়া পর্যন্ত।

আবু সালামা রাহ. বলেনআমি  আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রা.-কে প্রশ্ন করলাম-

أَيّةُ سَاعَةٍ هِيَ؟

ঐ সময়টা কোনটা?

তিনি বলেছেন-

آخِرُ سَاعَاتِ النّهَارِ.

তা হলদিনের শেষ ভাগ। -মুসনাদে আহমাদহাদীস ২৩৭৮১সুনানে ইবনে মাজাহহাদীস ১১৩৯

আরেক হাদীসে এসেছেআবু হুরায়রা রা. একবার কাব আহবার রাহ.-কে কয়েকটি হাদীস শুনিয়েছেন। একটি হলরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

وَفِيهِ سَاعَةٌ لاَ يُصَادِفُهَا عَبْدٌ مُسْلِمٌ وَهُوَ يُصَلِّي، يَسْأَلُ اللهَ شَيْئًا، إِلاّ أَعْطَاهُ إِيّاهُ.

জুমার দিন একটি সময় আছেকোনো মুসলিম নামাযরত অবস্থায় তখন আল্লাহর নিকট যা চাইবে আল্লাহ অবশ্যই তা দান করবেন।

কাব আহবার রাহ. বললেন-

ذَلِكَ فِي كُلِّ سَنَةٍ يَوْمٌ.

এই দিনটি প্রতি বছর এক দিন।

আবু হুরায়রা রা. বলেনআমি বললাম-

بَلْ فِي كُلِّ جُمُعَةٍ.

নাবরং প্রত্যেক জুমার দিন।

তখন তিনি তাওরাত খুলেছেন এবং তা দেখার পর বলেছেন-

صَدَقَ رَسُولُ اللهِ صَلى الله عَلَيهِ وَسَلمَ.

হাঁআল্লাহর রাসূল সত্য বলেছেন।

আবু হুরায়রা রা. বলেনএরপর একদিন আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রা.-এর সাথে সাক্ষাৎ করি। তাকে কাব আহবারের সাথে সাক্ষাতের বিষয় এবং তাকে যে হাদীস শুনিয়েছি এর বিবরণ দিই। তখন আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রা. বললেন-

قَدْ عَلِمْتُ أَيّةَ سَاعَةٍ هِيَ.

সে সময়টা কখনতা আমি জানি।

আবু হুরায়রা রা. বলেনআমি বললামআমাকে বলুনআমার সাথে কৃপণতা করবেন না।

আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রা. বললেন-

هِيَ آخِرُ سَاعَةٍ فِي يَوْمِ الْجُمُعَةِ.

সময়টি হলজুমার দিনের শেষ সময়।

আবু হুরায়রা রা বলেনআমি বললামঐ সময় কীভাবে হবেরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনমুসলিম বান্দা ঐ সময় নামাযরত থাকবে! আর আছরের পর তো নামায পড়া যায় না?

আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রা. উত্তর দিয়েছেন-

أَلَمْ يَقُلْ رَسُولُ اللهِ صَلى الله عَلَيهِ وَسَلمَمَنْ جَلَسَ مَجْلِسًا يَنْتَظِرُ الصّلاَةَ فَهُوَ فِي صَلاَةٍ حَتّى يُصَلِّيَ؟

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি বলেননিকোনো ব্যক্তি যতক্ষণ পর্যন্ত নামাযের অপেক্ষায় বসে থাকবেততক্ষণ  সে নামাযে আছে?

আবু হুরায়রা রা. বলেনআমি বললামহাঁ।

আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রা. বললেন-

فَهُوَ ذَلِكَ.

হাদীসে (নামাযরত বলার দ্বারা) এটাই উদ্দেশ্য। -মুয়াত্তা মালেকহাদীস ২৯১মুসনাদে আহমাদহাদীস ২৩৭৮৫সুনানে আবু দাউদহাদীস ১০৪৬জামে তিরমিযীহাদীস ৪৯১

অর্থাৎ দুআ কবুলের হাদীসটিতে যে বলা হয়েছেনামাযরত অবস্থায় দুআ করবেএর দ্বারা উদ্দেশ্য হলদিনের শেষ সময়ে বসে মাগরিবের নামাযের অপেক্ষায় থাকবে এবং দুআ করতে থাকবে। আর যে ব্যক্তি নামাযের অপেক্ষায় থাকে সে নামাযেই থাকে। 

যাইহোক আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রা. বলেছেনহাদীস শরীফে জুমার দিনের যে সময় দুআ কবুলের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে সে সময়টি হলদিনটির শেষ অংশ। এই কথা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত অন্যান্য হাদীসেও উল্লেখ হয়েছে।  যেমন ইতিপূর্বে জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রা.-এর হাদীসে  এসেছেআল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

فَالْتَمِسُوهَا آخِرَ السّاعَةِ بَعْدَ الْعَصْرِ.

সে সময়টি তোমরা অনুসন্ধান কর আসরের পর দিনের শেষ অংশটিতে।

মোটকথা জুমার দিনের দুআ কবুলের সময় কোন্টিতা নির্ধারণ নিয়ে যদিও বহু মত রয়েছেতবে এসবের মধ্যে অগ্রগণ্য মত হল দুইটি :

এক.

খতীব খুতবা দেওয়ার জন্য মিম্বরে উঠার পর থেকে নামায শেষ করা পর্যন্ত। আবু মূসা আশআরী রা.আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা.আবু বুরদা রাহ. প্রমুখ এই মতের প্রবক্তা। (দ্রষ্টব্য : মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাবর্ণনা ৫৫০৬৫৫০৭আততামহীদইবনে আবদুল বার ১৯/২২

দুই.

জুমার দিনের শেষ সময় তথা আসরের নামাযের পর থেকে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত। আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রা.আবু হুরায়রা রা.আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা.কাব আহবার রাহ.সাঈদ ইবনে জুবায়ের রাহ.মুজাহিদ রাহ. ও তাউস রাহ. প্রমুখ এই মত গ্রহণ করেছেন। (দ্রষ্টব্য : মুসান্নাফে  ইবনে আবী শায়বাবর্ণনা ৫৫০৩-৫৫০৫৫৫১৪আততামহীদ ১৯/২০২৩-২৪আলইস্তিযকার ৫/৮২৮৬৯৭)

সুতরাং আমরা জুমার দিন এই দুই সময় দুআর এহতেমাম করব। তাহলে ইনশাআল্লাহ আমাদের ঐ বিশেষ সময়ের ফযীলত লাভ হবে এবং আমাদের দুআ আল্লাহ কবুল করবেন। ইমাম আবু উমর ইবনে আবদুল বার রাহ. বলেছেন-

والذي ينبغي لكل مسلم الاجتهادُ في الدعاء للدين والدنيا في الوقتين المذكورين رجاءَ الإجابة، فإنه لا يخيب إن شاء الله.

প্রত্যেক মুসলিমের উচিতকবুলের আশা নিয়ে তার দ্বীন-দুনিয়ার যাবতীয় বিষয়ের জন্য এই দুই সময়ে গুরুত্বের সাথে দুআ করা। তাহলে ইনশাআল্লাহতার দুআ বৃথা যাবে না। -আততামহীদ ১৯/২৪

সালাফে সালেহীন যেভাবে এ সময়টার কদর করতেন

সালাফে সালেহীনের মধ্যে যাঁদের মতে দুআ কবুলের সময় হল জুমার নামাযের সময় তাঁরা তো ঐ সময়ই সে সৌভাগ্য লাভ করার জন্য ব্যাকুল থাকতেন। আর যাঁদের বক্তব্যসেই সময়টি দিনের শেষ বেলাতাঁরা আসরের নামায পড়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পুরো সময়টাই দুআ ও যিকিরে মগ্ন থাকতেন। সালেম রাহ. বলেন-

وَكَانَ سَعِيدٌ إِذَا صَلّى الْعَصْرَ لَمْ يُكَلِّمْ أَحَدًا إِلَى غُرُوبِ الشَمْسِ.

সাঈদ ইবনে জুবায়ের রাহ. জুমার দিন আসরের নামাযের পর সূর্যাস্ত পর্যন্ত কারো সাথে কথা বলতেন না। (দুআ-যিকিরে মগ্ন থাকতেন।) -আততামহীদইবনে আবদুল বার ১৯/২৩-২৪আলইস্তিযকারইবনে আবদুল বার ৫/৮৬-৮৭

লাইছ ইবনে আবী সুলাইম রাহ. বলেন-

وَكَانَ طَاوُسٌ إِذَا صَلّى الْعَصْرَ لَا يُكَلِّمُ أَحَدًا وَلَا يَلْتَفِتُ، مَشْغُولًا بِالدّعَاءِ وَالذِّكْرِ حَتّى تَغِيبَ الشّمْسُ.

তাউস রাহ. (জুমার দিন) আসরের পর কারো সাথে কথা বলতেন না এবং এদিক ওদিক তাকাতেন না। সূর্যাস্ত পর্যন্ত দুআ ও যিকিরে মশগুল থাকতেন। -আলইস্তিযকার ৫/৯৭আততামহীদ ২৩/৪৬

অন্যান্য অনেক বুযুর্গের মত শায়খুল হাদীস হযরত মাওলানা যাকারিয়া কান্ধলবী রাহ. এবং তাঁর আব্বাজান হযরত মাওলানা ইয়াহইয়া কান্ধলবী রাহ.-এরও এই মামূল ছিল। জুমার দিন আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত দুআ ও যিকিরে মগ্ন থাকতেন। সেদিন আসরের পরের স্বাভাবিক কাজ-কর্ম মাগরিবের পরে করতেন।

আল্লাহ আমাদের আমলের তাওফীক দিন-আমীন।

وآخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين.

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৩:৫৭
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ৬:৩৩
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:০২
  • ১১:৫৯
  • ৪:৩১
  • ৬:৩৩
  • ৭:৫৩
  • ৫:২১