দেশে ও দেশের বাহিরে একজন প্রতিনিধিত্বশীল শিল্পী হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইঃ মনীষা ভাদুড়ী মেরী।
সিয়াম সরকার জান, বিনোদন প্রতিনিধিঃ
মনিষা ভাদুড়ী মেরী। একটি পরিচিত নাম, ২০১৪ সালে আয়োজিত চ্যানেল আই সেরাকন্ঠের একজন প্রথম সারির শিল্পী। করেছেন তৃতীয় স্থান অর্জন। বেশ কিছু গান তার ইউটিউবে দর্শক হৃদয়ে বেশ সাড়া ফেলেছে। আজ তাই দেশের স্বনামধন্য পত্রিকা দৈনিক আস্হা’র আয়োজনে তার সঙ্গে কথোপকথন। সাথেই থাকুন।
জানঃ কেমন আছেন আপা?
মেরীঃ এই তো ভাই মোটামুটি।
জানঃ মোটামুটি কেনো?
মেরীঃ আপনি জানেন, এখন আমরা করোনা মহামারীর এক কঠিন দুঃসময় অতিবাহিত করছি। কী হবে আমাদের–এই বিষয়ে আমরা কেউ নিশ্চিত না। এ কারণে খুব চিন্তিত আছি দেশকে নিয়ে দেশের মাটি ও মানুষকে নিয়ে।
জানঃ ঠিক আছে। দিনকাল যাচ্ছে কেমন আপনার?
মেরীঃ ভালো না। লকডাউনে বাসাতেই পরিবারের সাথে আছি। ঘরে বসে গানের সাধনা করছি। এই আর কি।
জানঃ হুম। গান বাজনা কেমন চলছে?
মেরীঃ গান বাজনার ব্যাপারে বাসাতে নিয়মিত চর্চাটা চালিয়ে যাচ্ছি। আর এমনিতে তো সব ধরনের কনসার্ট বন্ধ আছে। আবার আমাদের অনেক আইডল চলে যাচ্ছে । এই ব্যাপারটায় খুব বিষণ্ন হয়ে আছি৷ ভালো লাগছে না কিছুই।
জানঃ ঈদের পরিকল্পনা আছে কী নতুন কোনো গানের?
মেরীঃ হ্যাঁ। ঈদকে সামনে রেখে আমার কিছু পরিকল্পনা আছে। যেমন, ও বন্ধু রে শিরোনামে একটা গান আসবে। যেটার কথা ও সুর আপনি করেছেন, মিউজিক ডিরেক্টর পিবি রুদ্র। গানচিত্র নির্মাণ করেছেন কাজল আরেফিন অনিক ভাই। আবার প্রত্যয় খান ভাইয়ের কম্পোজিশনে আমার কিছু গান আসবে। আবার কিছু গান থমকে আছে! দেশের পরিস্থিতি তো ভালো না।
জানঃ আপনি তো চ্যানেল আই সেরাকন্ঠে ছিলেন? অভিজ্ঞতা কেমন?
মেরীঃ চ্যানেল আই সেরা কন্ঠের অভিজ্ঞতা খুবই ভালো ও অনেক প্রেরণাময়। টোটাল আশি হাজার প্রতিযোগীর মধ্যে আমি তৃতীয় হয়েছি। এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কী হতে পারে! আবার সেরা কন্ঠের পরিচালক ছিলেন ইজাজ খান স্বপন স্যার। উনার সান্নিধ্যে যেতে পেরেছি। এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। শুধু তাই না, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ম্যাডাম, সামিনা চৌধুরী ম্যাডাম, শাহনাজ রহমতুল্লাহ ম্যাডাম আর ইবরার টিপু ভাই ছিলেন আমার বিচারক। তো উনাদের মতো দেশ বরেণ্য শিল্পীদের কাছে যেতে পেরেছি আবার উনারা আমাকে তৃতীয় স্হান অধিকার করতে সহায়তা করেছেন– এই গর্বিত বিষয় কখনো ভুলতে পারবো না। আর আমাদের গ্রুমিং করেছিলেন যারা তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। এই শিক্ষাটাকে কাজে লাগিয়ে আরও কিছু শেখার মাধ্যমেই এগিয়ে যেতে চাই।
জানঃ নিয়মিত কনসার্ট করছেন? কোন ধরনের কনসার্ট বেশী করা হয়?
মেরীঃ এখন সবই বন্ধ। তবে কর্পোরেট লেভেলের কনসার্টগুলো করা হয়, আবার স্কুল কলেজের কনসার্টগুলো করা হয়। সব ধরনের কনসার্টই করার চেষ্টা করি।
জানঃ করোনার কারণে কী আপনি কোনো দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত?
মেরীঃ হ্যাঁ। শুধু আমি না সবারই একই অবস্থা।
জানঃ এখন শোনা যায়, মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা খারাপ। অনেকে করোনাকে দুষছেন। এখন আমার প্রশ্ন হলো আপনি করোনা বাদে কাউকে বা কোনো বিশেষ শ্রেনিকে দায়ী করতে চান এই দূর অবস্থার জন্য?
মেরীঃ আমি করোনাকেই দোষ দিবো প্রথমে। সরাসরি কাউকে দোষ দিতে চাই না। তবে সাংস্কৃতিক পৃষ্ঠপোষকদের একটু সচেতনতা বাড়ানো দরকার। এটুকুই বলতে চাই।
জানঃ শুনলাম আকাশ সেনের সাথে একটা গান করেছেন। এই বিষয়ে একটু বিস্তারিত বলেন।
মেরীঃ হ্যাঁ। আকাশ সেনের সাথে একটা গান করেছি। সেটার শিরোনাম অনুভব৷ গানটি লিখেছেন রবিউল ইসলাম জীবন, কম্পোজিশন আর গেয়েছেন আকাশ সেন। গানচিত্র নির্মাণ করেছেন চন্দন রায় চৌধুরী। গানটি প্রকাশিত হয়েছে ধ্রুব মিউজিক স্টেশন থেকে।
জানঃ আর গান শেখার অনুপ্রেরণা কোথায় পেলেন?
মেরীঃ গান শেখার অনুপ্রেরণা পেয়েছি আমার বাবা মা ভাইয়ের কাছ থেকে। তিন বছর বয়স থেকে আমি গান করি।
জানঃ পড়াশোনা চলছে কেমন?
মেরীঃ আমি উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে এল এল বি’তে অনার্স করছি। তো সেখানে আমার প্রভিসি ম্যাডাম প্রফেসর ডক্টর ইয়াসমিন আরা লিখা আমাকে অনেক বেশী সহযোগীতা করে। ম্যাডাম প্রত্যেকটা অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ দেখে। আমার প্রত্যেকটা গান সব চেয়ে বেশী ম্যাডামই শোনেন। আর আমার ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান আফরোজা জেরিন উনি আমাকে নিজের মেয়ের মতো এতো বেশী কেয়ার করেন যে তা আমি এখন ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না।
জানঃ তো দৈনিক আস্হা’র এই আয়োজন কেমন লাগলো?
মেরীঃ খুবই ভালো। আর আমি দৈনিক আস্হা নিয়মিত পাঠ করি। আমার অনেক প্রিয় একজন মানুষ সিয়াম সরকার জান মানে আপনি যে এই পত্রিকায় আছেন তা জেনে আমি খুবই আনন্দিত। দৈনিক আস্হা’র মাননীয় সম্পাদক থেকে শুরু করে সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ যে এমন একটি আয়োজন আমাকে নিয়ে করা হচ্ছে। আর বিশেষ করে সিয়াম ভাই আপনাকেও আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ।
জানঃ আপনাকেও আমার ও সত্য সংবাদের নান্দনিক প্রতিনিধি দৈনিক আস্হা’র পক্ষ থেকে খুব খুব অভিনন্দন। ভালো থাকবেন।
আস্থা/এস.এস