নামমাত্র মূল্যে দেশেই হচ্ছে কিডনি প্রতিস্থাপন
এম এইচ ইলিয়াছঃ
বিদেশে অত্যধিক ব্যয়, ভিসা জটিলতা ও প্রতিস্থাপন পরবর্তী ফলোআপে লাখ লাখ টাকা খরচ হওয়ায় অনেকেই দেশেই প্রতিস্থাপন করছেন কিডনি। দেশে মাত্র দুই থেকে আড়াই লাখ টাকায় কিডনি প্রতিস্থাপন করা যাচ্ছে। এদিকে কিডনি সংযোজনে সফলতার হার উন্নত বিশ্বের কাছাকাছি হওয়ায় রোগীদের দেশেই চিকিৎসা নেবার আহ্বান বিশেষজ্ঞদের।
তবে স্বল্পমূল্যে রাজধানীর বাইরের হাসপাতালগুলোতেও এমন সুযোগ সৃষ্টিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ চিকিৎসকদের।
স্ত্রীর দেয়া ১ টি কিডনিতে যেন নতুন একটি জীবন ফিরে পেয়েছেন স্বামী। দুটো কিডনি অকেজো হওয়া আল আমিন ছুটি গিয়েছিলেন পার্শ্ববর্তী দেশের একটি হাসপাতালে। চিকিৎসার শুরুতেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৮ লাখ টাকা অগ্রিম চাওয়ায় দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছিলেন আল আমিন।
অবশেষে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বল্পমূল্যে কিডনি প্রতিস্থাপন করতে পেরে ভীষণ আনন্দিত এই যুবক।
আল আমিন বলেন, এখানে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে তারা আমার এই কিডনি প্রতিস্থাপন করেছে। আর স্বল্পমূল্যে কিডনি প্রতিস্থাপন করতে পেরে ভীষণ আনন্দতি আমি।
উন্নত বিশ্বের আদলে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে প্রতি সপ্তাহে একটি করে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে বিএসএমএমইউতে। একই সময়ে পাশাপাশি দুটি অপারেশন থিয়েটারে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দাতার শরীর থেকে নেয়া কিডনি সংযোজন করা হচ্ছে গ্রহীতার শরীরে।
বিএসএমএমইউ ইউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হাবিবুবর রহমান বলেন, ‘বিদেশে গিয়ে কিডনি প্রতিস্থাপন করতে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ হয়।
এখন পর্যন্ত বিএসএমএমইউতে মোট ৫১২ টি কিডনি সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়েছে। ১৪ দিনের প্যাকেজে মাত্র ১ লাখ ৬০ হাজার টাকায় প্রতিস্থাপিত হচ্ছে এক একটি কিডনি। এর সাথে আনুষঙ্গিক ব্যয় হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। তবে বিশ্বের যে কোন দেশের তুলনায় বাংলাদেশে কিডনি প্রতিস্থাপন ব্যয় সর্বনিম্ন বলে মত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের।
বেসরকারি হাসপাতালে প্রতিস্থাপন ব্যয় দ্বিগুণ তিনগুণ হলেও কম খরচে দেশের বড় হাসপাতালে এ চিকিৎসা চালু করতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।
দেশে প্রতিবছর ৩৫ হাজার মানুষের কিডনি স্থায়ীভাবে অকার্যকর হচ্ছে। তাই ভুক্তভোগীদের বাইরে না গিয়ে দেশের ভেতরেই স্বল্পমূল্যে উন্নত চিকিৎসা সেবা নেবার আহ্বান কিডনি বিশেষজ্ঞদের।