DoinikAstha Epaper Version
ঢাকাবৃহস্পতিবার ২৫শে এপ্রিল ২০২৪
ঢাকাবৃহস্পতিবার ২৫শে এপ্রিল ২০২৪

আজকের সর্বশেষ সবখবর

শাক বিক্রি করে রাধার সংসার চলে

DoinikAstha
এপ্রিল ২৫, ২০২২ ১:৩৩ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

রিয়াজুল হক সাগর ,রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃ রংপুরে গংগাচড়া উপজেলার ধামুরে বাসা মেয়েটির সে বলেন বাবা যখন তিস্তা নদীত মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান তখন তাঁর বয়স ১৯ দিন। আর কোনো ভাইবোনও নেই। তাই মায়ের দেখভাল করার জন্য ১৩ বছর ধরে রংপুর শহরে নানা ধরনের শাক বিক্রি করে রাধা সংসার চালিয়ে আসছেন রাধারানী। তাঁর বাবার নাম উমাকান্ত। আর মায়ের নাম সুখসারি। সব কষ্ট ভুলেই যেন বললেন, ‘ভালোই আছি। মায়ের জন্য মোক বাঁচি থাকা লাগবে।’

রাধা রানীর বয়স ৩২। হালকা পাতলা গড়ন। অভাব-অনটনের জীবন হলেও মুখে হাসি লেগেই থাকে। ১৪ বছর আগে বিয়ে করেছিলেন রাধা রানী। তবে স্বামীর সঙ্গে মাত্র আট দিনের সংসার হয়েছে। স্বামী মাদকাসক্ত হওয়ায় সেই সংসার টেকেনি। এরপর আর বিয়ে করেননি রাধা। শাক বিক্রি করে এখন জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি।

রংপুর জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটের পাশে রাধার সঙ্গে দেখা হলো। জেলা পরিষদ সুপারমার্কেটের পাশে ট্রাফিক আইল্যান্ডের সামনে রাস্তার পাশে বসে শাক বিক্রি করছিলেন তিনি। জানালেন, গঙ্গাচড়া উপজেলার ধামুর এলাকায় তাঁর বাড়ি। সেখান থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরের এলাকা থেকে নানা ধরনের শাক নিয়ে শহরে আসেন বিক্রি করতে। শুক্র ও শনিবার ছাড়া পাঁচ দিনই সন্ধ্যার পর শাক বিক্রি করেন।

রাধার ভ্যান গাড়িতে থরে থরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে কচুশাক ও চামগাছ। প্রতি আঁটি কচুশাক ১৫ আর চামগাছ ১০ টাকা। বিক্রিও মন্দ নয়। এখান থেকে যা লাভ হয়, তা দিয়ে মা-মেয়ের সংসার চলে যায়।

স্বামীর কথা জিজ্ঞাসা করতেই রাধা বললেন, ‘স্বামীক বাদ দিছোও (দিয়েছি)। বিয়ার পর মাত্র আট দিন সংসার হইছে। নেশা করত। পরে স্বামীক বাদ দিয়া বাড়িত চলি আসছোও।’

এক যুগেরও বেশি সময় ধরে শাক বিক্রি করে গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের ধামুর এলাকায় এক শতক জমিও কিনেছেন রাধা। সেখানে টিনের ঘর তুলে মাকে নিয়ে বসবাস করেন। শুক্র ও শনিবার বাড়ির কাজ করেন। তিস্তা নদীর চর থেকে ভুট্টাগাছ সংগ্রহ করে শুকিয়ে জ্বালানির জন্য ব্যবহার করেন।

শাক বিক্রি করে প্রতিদিন আয়রোজগার হয় ৪০০-৫০০ টাকা। আবার কোনো দিন বেশিও হয়। এই টাকা দিয়ে চাল, ডালসহ নিত্যপণ্য কিনে থাকেন। তবে বেশি টাকা ব্যয় হয় মায়ের চিকিৎসার জন্য।

সন্ধ্যার পর ১২ কিলোমিটার দূরের গঙ্গাচড়া থেকে ছুটে আসা রাধা রানী রাত ১টা পর্যন্ত শহরে শাক বিক্রি করেন। এরপর একাই অটোরিকশায় চড়ে বাড়িতে ফেরেন। রাধা রানীকে ওই বাজারের কম–বেশি সবাই চেনেন। নিজে বেঁচে থাকতে আর মাকে ভালো রাখতে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। মানুষের কাছে হাত না পেতে কর্মমুখী হয়েছেন।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:০৮
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ৬:২৮
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:১৩
  • ১২:০০
  • ৪:৩১
  • ৬:২৮
  • ৭:৪৭
  • ৫:২৮