রংপুরে আ’লীগ কর্মী হত্যায় কারাগারে ভাইস চেয়ারম্যান
রংপুর প্রতিনিধিঃ
রংপুরের কাউনিয়ায় বাণিজ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে স্লোগান দেওয়ার জেরে সোনা মিয়া (৫৫) নামে আওয়ামী লীগের এক কর্মীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুর রাজ্জাকের জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ সোমবার (৫ জুন) দুপুরে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন জানালে বিচারক শহীদুল ইসলাম শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালত পরিদর্শক মীর আতাহার আলী বলেন, সোনা মিয়া হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত ১ নং আসামি কাউনিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক গত ৮ মে উচ্চ আদালত থেকে চার সপ্তাহের জামিন নেন।
জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় সোমবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন জানালে বিচারক নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
স্থানীয় ও মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ এপ্রিল (সোমবার) বিকেলে উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়নের খানসামা হাট এলাকায় ইমামগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। মন্ত্রী মাঠে উপস্থিত হতেই নেতাকর্মীরা বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম মায়ার নামে স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে ভাইস চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক ও তার বড় ভাই রাজুসহ তাদের লোকজনের সঙ্গে স্লোগান দেওয়া নেতাকর্মীদের বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি গাড়ি থেকে না নেমেই চলে যান। বিকেলের বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওইদিন রাত সাড়ে আটটার দিকে হারাগাছ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের চার নাম্বার ওয়ার্ডের সভাপতি মুকুল মিয়ার ভাই সোনা মিয়াকে বাজারে একা পেয়ে ভাইস চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক ও তার বড় ভাই রাজুর নেতৃত্বে মোটরসাইকেলে আসা হেলমেট পরিহিত ব্যক্তিরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে তাকে হত্যা করেন।
সোনা মিয়া হারাগাছ ইউনিয়নের নাজিরদহ নয়াটারী গ্ৰামের মৃত আবদুল খালেকের ছেলে। তিনি ওই ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য।
এ ঘটনায় ২৬ এপ্রিল (বুধবার) বেলা দুইটার দিকে সোনা মিয়ার বড় ছেলে আখতারুজ্জামান (২৯) বাদী হয়ে কাউনিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবদুর রাজ্জাক ও তার বড় ভাই হারাগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি কুর্শা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদসহ ৭৬ জনের নাম উল্লেখ করে কাউনিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় ১৫ থেকে ২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।