কিশোরগঞ্জে মিঠামইনে আওয়ামী লীগ নেতাদের দখলে থাকা ৬শতাংশ ভূমি ১৮ বছর পর ফেরত পেলেন জমির প্রকৃত মালিক।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার গোপদিঘী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের স্বাক্ষরিত সালিশি রায়ের কপি ভূমির প্রকৃত মালিক মো. মামুন মিয়ার নিকট হস্তান্তর করেন।
এ সময় গোপদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের ইপি সদস্য, সংরক্ষিত আসনে নারী সদস্য ও স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
সালিশি অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মো. মামুন মিয়ার পিতা মো. আবুল হাশেম গোপদিঘী বাজারে এস.এ রেকর্ড ও আর.এস রেকর্ডের মালিকের কাছ থেকে ১৯৮৮সালে সাফ কাওলা মূলে ৮শতাংশ ভূমি ক্রয় করে স্বত্ব দখলে থাকা অবস্থায় ২০০৬ সালে একই এলাকার আ. ছাত্তার, মোবারক ও আশরাফ মিয়া ক্ষমতার জোরে উক্ত ভূমিতে দোকান ঘর নির্মাণ করে ব্যবসা পরিচালনা শুরু করে। পরবর্তীতের আবুল হাশেমের ছেলে মামুন মিয়া দোকনঘর নির্মানের বিষয়ে জানতে চাইলে উভয় পক্ষ জমির মালিকানা দলিল নিয়ে বসার দিন তারিখ নির্ধারিত করে। কিন্তু মামুন মিয়ার প্রস্তুত থাকলেও অপর পক্ষ সালিশে বসেনি।
ভূমির মালিক মামুন মিয়া বলেন, ‘১৯৮৮ সালে মিঠামইন উপজেলার গোপদিঘী মৌজায় ১৭৬৬ দাগে ৮শতাংশ জায়গা আমার পিতা মৃত আবুল হাশেম সাফ কাওলা দলিলমূলে ক্রয় করে স্বত্ব দখলে ছিলেন। পরে আমার বাবা মারা গেলে ২০০৬ সালে গোপদিঘী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মীরফত আলী ও ইউনিয়ন আওয়ামী সাবেক যুবলীগের সভাপতি আশরাফ মেম্বার দলীয় প্রভাব খাটিয়ে আমাদের জায়গাটি বেদখল করে। তখন আমরা বাধা দিলেও আমাদের বাধা না মেনে উক্ত ভূমিতে দোকানঘর নির্মাণ করে এবং আমাদের জমির মালিখানা দলিল নিয়ে বসতে বলে। আমরা জমির মালিখানা দলিল নিয়ে বসার ব্যবস্থা করলেও তারা বসবে বলে টালবাহানা শুরু করে। পরবর্তীতে দরবারিদের চাপে সালিশে বসে এবং ১৯৮৬সালে রেজিস্ট্রিকৃত ৩৬৪৮ নাম্বারের একটি দলিল পদর্শন করে । যা পরবর্তীতে আদালত দলিলটিকে জাল প্রমাণ করে এবং জাল দলিল করা অপরাধে বিচারক আসামিদের জেল হাজতে প্রেরণ করে। ইদানিং আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং তারিখ আমি গোপদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায় করি। পরবর্তীতের চেয়ারম্যান সাহেব আমার ও বিবাদী পক্ষকে জমির মালিখানা দলিলের সহি মহুরি ও অন্যান্য কাগজপত্র জমাদিতে বলেন। কিন্তু আমি দিতে পারলেও বিবাদী পক্ষ দিতে পারেনি। পরবর্তীতে চেয়ারম্যান আমার কাগজপত্র সঠিক দেখে স্থানীয় ও জেলার গর্ণমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে আমার পক্ষে রায় ঘোষণা করেন।’।
গোপদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘গত ২৯ আগস্ট গোপদিঘী বাজারে দুই পক্ষ জায়গা নিয়ে ঝগড়া সৃষ্টি করে । পরবর্তী স্থানীয় আশরাফ আলী মাস্টার, সাইদুর রহমান ও হান্নান সাহেবের মধ্যস্থতায় ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং তারিখ গোপদিঘী ইউপি কার্যালয়ে একটি সালিশের ব্যবস্থা করি এবং উভয় পক্ষকে জমির কাগজপত্র জমা দিতে বলি। পরে বাদী পক্ষ মামুন তার সকল কাগজপত্র জমা দেয়। আর বিবাদী পক্ষ একটি দলিল জমা দেয়। যা সকল সালিশানদের কাছে জাল মনে হয়। পরবর্তীতে বিবাদী পক্ষকে দলিলের সহি মহুরির জন্য আরও ১৪ দিন সময় দেওয়া হয়। কিন্তু বিবাদী পক্ষ ১৪ দিনে কোনো কাগজপত্র জমা দিতে পারেনি। অপর দিকে বাদির কাগজপত্র সঠিক হওয়ায় বিজ্ঞ সালিশানের সিদ্ধান্ত মোতাবেক জমির প্রকৃত মালিক মো. মামুন মিয়ার কাছে রায়ে কপি হস্তান্তর করা করি।’।