যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কারাবন্দি আসামির জামিন চেয়েছেন স্বয়ং ধর্ষিতা। মুক্তি পেলে তারা বিয়ে করবেন, একথা বলে তিনি হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন। তবে ওই আসামির জামিন দেননি হাইকোর্ট। বরং কারাফটকেই আসামি এবং ভুক্তভোগীর বিয়ে আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ভিকটিমের পক্ষে আদালতে জামিন আবেদন দাখিল করেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহেদ চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
নারায়ণগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতা তোফা আহম্মেদকে ডোপ টেস্টের নির্দেশ
কারাফটকে বিয়ের আয়োজন করতে রাজশাহী কারাগারের তত্ত্বাবধায়কের প্রতি নির্দেশ দিয়ে আদেশে বলা হয়েছে, এই বিয়ের বিষয়ে ৩০ দিনের মধ্যে লিখিতভাবে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।
জানা গেছে, রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলার সিতানাথ খালকোর ছেলে দিলীপ খালকোর সঙ্গে তার খালাতো বোনের (ভিকটিম) মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল। এরই সূত্র ধরে ভিকটিমকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার সঙ্গে ২০১১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি দৈহিক মেলামেশা করে দিলীপ খালকো। এতে ভিকটিম গর্ভবতী হয়ে পড়েন। কিন্তু এরপর থেকে দিলীপ খালকো আর বিয়ে করতে রাজি হননি। এ নিয়ে সালিশ করা নিয়ে সময়ক্ষেপন করা হয়। শেষ পর্যন্ত সালিশ বৈঠক না হওয়ায় ভিকটিম ওইবছরের ২৩ অক্টোবর স্থানীয় ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে হাজির হয়ে তার পেগনেনসি পরীক্ষা করেন।
এরপর ২৫ অক্টোবর গোদাগাড়ি থানায় হাজির হয়ে দিলীপ খালকোর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। এ মামলায় আসামির বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর বিচার শেষে ওইবছরের ১২ জুন এক রায়ে দিলীপ খালকোকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। রায়ে বলা হয়, যখন ভিকটিম ধর্ষণের শিকার হন তখন তার বয়স ছিল ১৪ বছর।
এ অবস্থায় কারাবন্দি দিলীপের জামিনের জন্য স্বয়ং ভুক্তভোগী হাইকোর্টে আবেদন করেন। আবেদনে তিনি জানান, জামিন পেলে তারা বিয়ের পিঁড়িতে বসবেন। তবে আদালত জামিন দেননি। কারাফটকেই তাদের বিয়ের আয়োজন করতে কারা তত্ত্বাবধায়ককে নির্দেশ দেন।