চাঁদা না পেয়ে যুবকের দুই পা ভাঙল সন্ত্রাসীরা
কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার মুরাদনগরে চাঁদা না দেওয়ায় উত্তম দেবনাথ (৩৭) নামে এক যুবকের দুই পা কুপিয়ে ও পিটিয়ে ভেঙে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী। তবে ঘটনার ৮ দিন পার হলেও জড়িত কাউকে এখনো আটক করতে পারেনি পুলিশ। উল্টো সন্ত্রাসীদের ভয়ে ভুক্তভোগীর পরিবার এলাকা থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গুরুতর আহত উত্তম উপজেলার রহিমপুর দড়িকান্দী গ্রামের মৃত সুভাষ দেবনাথের ছেলে। বর্তমানে তিনি ঢাকার শেরে-ই-বাংলা নগর জাতীয় অর্থোপেডিক ও পূণর্বাসন হাসপাতালের চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
থানায় দায়ের করা মামলা থেকে জানা গেছে, উত্তম দেবনাথ দীর্ঘদিন যাবৎ মাশরুম চাষ করে পরিবারের ভরণ-পোষণ চালিয়ে আসছেন। ব্যবসা পরিচালনা করতে হলে স্থানীয় মৃত তালেব আলীর ছেলে হেলাল চৌধুরী (৪৪) তার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
উত্তম চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তার উপর ক্ষুব্ধ হয় হেলাল। এক পর্যায়ে গত ২২ মে দিবাগত রাত ১টায় স্থানীয় এলাকার বাসিন্দা মামুন নামের এক প্রবাসীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়ে বাড়ি ফেরার পথে মুরাদনগর থেকে রামচন্দ্রপুর সড়কের নাতবাড়ির সামনে দেশীয় অস্ত্রসহ তার পথরোধ করে হেলাল ও তার লোকজন। এ সময় সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে উত্তমের দুটি পা ভেঙে দেয়। এ ছাড়া তার পকেটে থাকা নগদ ৪০ হাজার টাকা ও ৪৫ হাজার টাকা মূল্যের স্মার্টফোন ছিনিয়ে নেয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) আল-আমিন বাদশা সাংবাদিকদের বলেন, হামলাকারী ডিস হেলাল এখন টাকা কামিয়ে হয়েছেন চৌধুরী হেলাল। টেন্ডার, মাদক ও চাঁদাবাজি করাই হচ্ছে তার পেশা। উত্তম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোক। তার ব্যবসার উন্নতি দেখে সেদিকে চোখ যায় হেলাল ও তার লোকজনের। দুই লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে রাম দা দিয়ে কুপিয়ে উত্তমের দুটি পা ভেঙে দিয়েছে তারা।
আহত উত্তম দেবনাথ মুঠোফোনে বলেন, আমাদের এলাকার মামুনকে হাসপাতাল থেকে পরিচর্যা করে বাড়ি আসার পথে হেলাল তার লোকজন নিয়ে আচমকা আমার ওপর হামলা করে। কারণ বেশ কিছুদিন ধরে সে আমার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করছিল। তাকে চাঁদা দিতে না পারায়, আমাকে পঙ্গু করে দিয়েছে।
এদিকে, এ ঘটনার ২৭ মে থানায় মামলা হওয়ার পর থেকে অভিযুক্ত হেলাল চৌধুরী এলাকা থেকে গা-ঢাকা দিয়েছেন। এ ছাড়া মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুরাদনগর থানার ওসি আজিজুল বারী ইবনে জলিল সাংবাদিকদের বলেন, উত্তমকে মেরে পা ভেঙে দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আসামিদের ধরার চেষ্টা চলছে।