অনলাইন ডেস্কঃ
রাজধানীর খিলগাঁও, বাসাবো, মাদারটেকসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় বিশটি বাসা ভাড়া নিয়ে চলে অপরাধ চক্রটির কর্মকাণ্ড। এই চক্রের রয়েছে একদল নারী সদস্যও। অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থেকে সাধারণ পেশাজীবীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে বা অন্য কৌশলে বাসায় এনে ধারণ করা হয় আপত্তিকর ভিডিও। একপর্যায়ে পুলিশ কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও স্থানীয় রাজনীতিবিদ পরিচয়ে সেখানে হাজির হয় চক্রের পুরুষ সদস্যরা। তারপর ভয়-ভীতি দেখিয়ে আদায় করা হয় বিপুল অর্থ।
ঢাকার খিলগাঁওয়ে বাড়ির নিচতলা ভাড়া নিয়ে চাঁদাবাজি করছিল অপরাধীরা। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এ রকম প্রায় বিশটি আস্তানা বানিয়েছিল চক্রটি।
পণ্য সরবরাহ করতে এসে চাঁদাবাজির শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতা জানান এক তরুণ। তিনি বলেন, তারা আমাকে আটকে রেখে মারধর করে টাকা পয়সা নেয়। আমার কাছ থেকে কার্ড নিয়ে পিন নাম্বার নেয়। পরবর্তীতে আবার যোগাযোগ করে আরও টাকা পয়সা নেয়।
অভিযানে নেমে চক্রটির ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর গোয়েন্দা পুলিশ জানিয়েছে, টার্গেট ব্যক্তিদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে চক্রের নারী সদস্যরা। তারপর যৌন সম্পর্কের প্রলোভনে তাদের বাসায় এনে অশালীন ভিডিও ধারণ করা হয়। ঠিক তখনই হুড়মুড় করে দরজা খুলে ঢুকে পড়ে পুলিশ, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদের পরিচয়ে চক্রের পুরুষ সদস্যরা। ছিনিয়ে নেয়া হয় খপ্পরে পড়া ব্যক্তির মোবাইল ফোন, ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড ও নগদ টাকা।
চাঁদাবাজ চক্রের সদস্য কামরুজ্জামান সোহেল বলেন, সেখানে যাওয়ার পর তারা যখন আপত্তিকর অবস্থায় থাকে তখনই আমরা সেখানে উপস্থিত হই। তখন আমরা তাদের কাছ থেকে টাকা পয়সা নিয়ে নি।
ভুক্তভোগীদের ব্যাংক কার্ড ব্যবহার করে টাকা তুলে নেয় চক্রের সেকেন্ড ইন কমান্ড বদিউজ্জামান শাহীন। আর মোবাইল ব্যাংকিংয়ের টাকা পাঠানো হয় হবিগঞ্জে, চক্রের সদস্য সাইফুল ইসলাম ইমরানের কাছে। পরে টাকা তুলে সবার মাঝে ভাগ করে দেয়া হয়।
চাঁদাবাজ চক্রের দ্বিতীয় প্রধান বদিউজ্জামান শাহীন বলেন, যখন কাজ করার জন্য লোক নিয়ে আসতো তখন আমরা লোকজন নিয়ে সেখানে উপস্থিত হতাম। তাকে বিভিন্নভাবে জেরা করতাম। ভয়ভীতি দেখাতাম।
চাঁদাবাজির টাকায় বিপুল সম্পদ গড়া চক্রের প্রধান পনিরসহ এখনও পলাতক রয়েছে দশজনের বেশি সসদ্য। বনশ্রীতে নিজের ফ্ল্যাট কিনেছে চক্রের দ্বিতীয় প্রধান শাহীন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের (তেজগাঁও) উপ কমিশনার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, তারা একটা বিকাশ নাম্বার ব্যবহার করে। তারা ভুক্তভোগীকে তার পরিচিতদের দিয়ে সেই নাম্বারে টাকা পাঠানোর জন্য বলে। এভাবে তারা একেক ভুক্তভোগী থেকে অনেক টাকা সংগ্রহ করে।
বাসা-বাড়িতে অস্বাভাবিক কর্মকাণ্ড দেখলে থানায় জানানোর পরামর্শ পুলিশের।