DoinikAstha Epaper Version
ঢাকাবুধবার ১লা মে ২০২৪
ঢাকাবুধবার ১লা মে ২০২৪

আজকের সর্বশেষ সবখবর

ফুলবাড়ীয়ায় শিক্ষার্থী সংকটে ইবতেদায়ীর শিক্ষকরা

Abdullah
আগস্ট ২৫, ২০২৩ ৩:৪১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ফুলবাড়ীয়ায় শিক্ষার্থী সংকটে ইবতেদায়ীর শিক্ষকরা

 

মোঃ হাবিব/ফুলবাড়ীয়া প্রতিনিধিঃ

মাদরাসা শিক্ষার প্রাথমিকস্তর হচ্ছে ইবতেদায়ী শাখা। এতে শিশুদের প্রথম শ্রেণী থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করানো হয়। আর এই ইবতেদায়ীর ধাপ পেরিয়েই শিক্ষার্থীদের ভর্তি হতে হয় মাদরাসার মাধ্যমিক পর্যায়ে দাখিল শাখায়। যে কারনেই চালু করা হয় ইবতেদায়ী মাদরাসা। বর্তমানে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠনাগুলো ভোগছে শিক্ষার্থী সংকটে। শিক্ষক থাকলেও নেই শিক্ষার্থী। সত্যিকারার্থে হতবাক হলেও এমনই অবস্থা বিরাজ করছে ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার মাদরাসা গুলোর ইবতেদায়ী শাখায়।

দাখিল, আলিম ও ফাজিল মাদরাসার সাথে সংযুক্ত ইবতেদায়ী শাখা গুলির এমন অবস্থা। গত ১৬ আগস্ট সকাল ১টায় এনায়েতপুর ইউনিয়নের শুশুতি গ্রামের তাওহিদীয়া বালিকা দাখিল মাদরাসায় গিয়ে ইবতেদায়ী শাখায় একজন শিক্ষার্থীও পাওয়া যায়নি। পাঁচটি শ্রেণি কক্ষে সব কটি ছিল শূন্য। শুধু অফিসে ইবতেদায়ী প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকগন ছিলেন উপস্থিত।

একই চিত্র প্রতিদিনেরই বলে জানান এলাকাবাসী। এ প্রতিষ্ঠানের ইবতেদায়ী শাখায় সরকারী নিয়োগ প্রাপ্ত এমপিও ভুক্ত ৩জন শিক্ষক থাকলেও কোন শ্রেণীতে দেখা মেলেনি শিক্ষার্থীর।

ইবতেদায়ী শাখার প্রধান শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিনের কাছে শিক্ষার্থীর তথ্য চাওয়া হলে তিনি হাতে লেখা একটি কাগজে ধরিয়ে দেন। তাতে প্রথম শ্রেণীতে ৪১ জন, দ্বিতীয় শ্রেণীতে ৪৩ জন, তৃতীয় শ্রেনীতে ৩৮ জন, চতুর্থ শ্রেণীতে ৪৪ জন ও পঞ্চম শ্রেণীতে ২৪ জন সর্বমোট ১শ ৭০ জন শিক্ষার্থীর তালিকা রয়েছে। খাতা কলমেও তাই। কিন্তুু বাস্তবতা তার বিপরীত। শ্রেণী কক্ষে গিয়ে পাওয়া যায়নি একজন শিক্ষার্থীকেও।

 

স্থানীয় সুত্র জানায়, তাওহিদীয়া দাখিল বালিকা মাদরাসার ইবতেদায়ী শাখায়হাতেগোনা কয়েকজন শিক্ষার্থী আসে। পাশেই আরেকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকায় এবং শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতা, লেখা-পড়ার মান ভালো না হওয়ায় ঐ মাদরাসায় সহজে কোন অভিভাবক বাচ্চা দিতে রাজি হয় না। শিক্ষার্থী সংকট উত্তোরনে কোন উদ্যোগ না থাকায় প্রতিষ্ঠানটি ফাঁকিভাজের অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে।

 

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এ মাদরাসাটির দাখিল শাখা কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও ইবতেদায়ী শাখার অবস্থা খুবই নাজুক। শিক্ষার্থী ভর্তিতে অভিভাবকদের অনাগ্রহতায় শিক্ষকদের দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। এদের পিছনে অহেতুক সরকারি অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন সে।

 

এ বিষয়ে তাওহিদীয়া দাখিল মাদরাসার ইবতেদায়ী প্রধান সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, এটি গরীব এলাকা, এছাড়া এখানে বিস্কুট ও উপবৃত্তি না দেওয়ায় অভিভাবকরা ছেলে মেয়েদের (ছাত্র /ছাত্রী)কে ভর্তি করতে চায় না। যারা আসে তারা কিছু দিন পরে এমনেতেই চলে যায়।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলায় ৪৩ টি দাখিল ১টি আলিম ৭ টি ফাজিল মাদরাসায় মাধ্যমিকের পাশাপাশি ইবতেদায়ী (প্রাথমিক) শিক্ষা শাখা চালু থাকলেও অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী সংকট দেখা দিয়েছে। এসব দাখিল, আলিম ও ফাজিল মাদরাসার এবতেদায়ী শাখায় শিক্ষক থাকলেও নেই কোন শিক্ষার্থী। কোথাও আবার শিক্ষার্থী থাকলেও পাঠদান কার্যক্রম খুবই অপ্রতুল ।

 

একই অবস্থায় এনায়েতপুর ও ভবানীপুর ফাজিল মাদরাসা ও পলাশীহাটা দাখিল মাদরাসার এবতেদায়ী শাখার ৫ম শ্রেণীতে ২৫ জন শিক্ষার্থী থাকলেও উপস্থিত পাওয়া যায় ৬ জনকে। এছাড়াও কুশমাইলের জলিলিয়া দাখিল মাদরাসার ইবতেদায়ী শাখার নাজুক অবস্থা লক্ষ্য করা গেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপরে যথাযথ তদারকি না থাকায় অধিকাংশ মাদরাসায় ইবতেদায়ী (প্রাথমিক) স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থা হ-য-ব-র-ল অবস্থা। ছাত্র/ছাত্রী খাতা কলমে থাকলেও শ্রেণী কক্ষে নেই। নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষকগণ শ্রেণী কার্যক্রম চালাচ্ছে মাধ্যমিক (দাখিল) শাখায়।

 

তাছাড়া শিক্ষার মান নিয়ে ইবতেদায়ী মাদরাসার ভালো মন্দের পর্যালোচনা করলে মন্দের পাল্লাই ভারী হবে। এ অবস্থায় ইবতেদায়ির শিক্ষা কার্যক্রম চলতে থাকলে খুব দ্রুত সময়েই ফুলবাড়িয়ায় মাদরাসা মাধ্যমিক (দাখিল) ও উচ্চ মাধ্যমিক লেভেল (আলিম) পর্যায়ে শিক্ষার্থী টানপোড়নের শঙ্কা দেখা দিতে পারে বলেও দাবি শিক্ষাবিদদের।

 

তাওহিদীয়া বালিকা দাখিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মৌঃ মোঃ আব্দুল লতিফ এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, স্কুলে বিস্কুট উপবৃত্তি দেওয়া হয়। তাই মাদরাসায় শিক্ষার্থীরা আসতে চায় না।

 

এব্যাপারে উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মোহসিনা বেগম বলেন, আমরা শুধু মাধ্যমিক স্কুল গুলো দেখে থাকি। মাদরাসা গুলির ব্যাপারে আমাদের কিছু বলার
নেই।

 

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, পরিদর্শন সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাহিদুল করিম বলেন, বিষয়টি আমলে নিয়েছি, পরির্দশন করে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:০৮
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ৬:২৮
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:১৩
  • ১২:০০
  • ৪:৩১
  • ৬:২৮
  • ৭:৪৭
  • ৫:২৮