গাইবান্ধায় ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ, ওসির গ্রেফতার দাবি, এসপি অফিস ঘেরাও
১২ এপ্রিল সোমবার সকাল ১১টায় গাইবান্ধা জেলা শহরের সকল ওষুধের দোকানসহ মার্কেট-শপিংমল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে ব্যবসায়ীরা শহরের ডিবি রোডে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচীতে অংশ নেন। গাইবান্ধা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ আয়োজিত আসাদুজ্জামান মার্কেটের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গাইবান্ধা সদর থানার ওসিকে গ্রেফতার, ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনসহ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি জানানো হয়।
এই কর্মসূচীতে জেলার রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া সংগঠন, সাংবাদিক ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ এবং নিহত হাসান আলীর স্ত্রী বিথি বেগম, ছোট ছেলে হেদায়েতুল ইসলাম শাফিন অংশ নেন। মানববন্ধন ও সমাবেশ শেষে বিক্ষুব্ধ লোকজন মিছিল নিয়ে এসপি অফিস ঘেরাও করেন। এসময় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম মতবিনিময় করেন। ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ২৪ ঘন্টার মধ্যে উল্লেখিত দাবিসমূহ বাস্তবায়নের দাবি জানান।
অন্যথায় হরতালসহ লাগাতার নানা কর্মসূচী পালন করবে বলে আল্টিমেটাম দেন। পুলিশ সুপার তাদের বক্তব্য শোনেন এবং তা তদন্তপূর্বক বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। এসময় পুলিশ সুপার নিহত হাসান আলীর ছেলে হেদায়েতুল ইসলাম শাফিনের লেখাপড়ার দায়িত্ব নেয়ার ঘোষণা দেন।
গাইবান্ধা চেম্বার সভাপতি শহিদুল ইসলাম শান্তর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, রাজনীতিক আমিনুল ইসলাম গোলাপ, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ শরিফুল ইসলাম বাবলু, বীর মুক্তিযোদ্ধা ময়নুল ইসলাম রাজা, মিহির ঘোষ, গোলাম মারুফ মনা, জিয়াউল হক জনি, মনজুর আলম মিঠু, কাজী আবু রাহেন শফিউল্যাহ খোকন, গোলাম রব্বানী, জেলা যুবলীগ সভাপতি সরদার মো. শাহীদ হাসান লোটন, গাইবান্ধা চেম্বারের সহ-সভাপতি মোস্তাক আহমেদ রঞ্জু, ওষুধ ব্যবসায়ী সমিতির জেলা সভাপতি আব্দুর রশিদ সরকার, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা সভাপতি রেজাউন্নবী রাজু, গাইবান্ধা নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংস্থার সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ দাশ দিপু, জেলা ব্যবসায়ী সমন্বয় সমিতির সভাপতি ইকবাল আহমেদ, মাইক ব্যবসায়ী সমিতির জেলা সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মিয়া, পাদুকা ব্যবসায়ী সমিতির জেলা সভাপতি আলিম মিয়া, জেলা দোকান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল সাহা, সাবেক ছাত্রনেতা আরিফুল ইসলাম চৌধুরী শাহীন প্রমুখ।
বক্তারা, হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত, দাদন ব্যবসায়ী আ’লীগ নেতা মাসুদ রানার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে সদর থানার ওসি মাহফুজুর রহমানকে গ্রেফতার, ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাদের শাস্তি এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান। দাবি আদায় না হলে জেলায় সর্বাত্মক হরতালের হুশিয়ারী দেন বক্তারা। এদিকে হাসান আলী নিহতের ঘটনায় রবিবার রাতে গাইবান্ধা সদর থানায় দায়ের করা মামলায় দুই পুলিশ সদস্যের গাফিলতির অভিযোগ এনে তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।
এ মামলায় গ্রেফতার আওয়ামী লীগ নেতাকে চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। উল্লেখ্য, গাইবান্ধা জেলা শহরের খানকা শরীফ সংলগ্ন নারায়নপুর এলাকার জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক কুখ্যাত দাদন ব্যবসায়ী মাসুদ রানার বাড়ী থেকে ১০ এপ্রিল শনিবার সকালে হাসান আলী (৪৫) নামে এক ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত হাসান আলী শহরের থানাপাড়া এলাকার মৃত হজরত আলীর ছেলে।