রংপুর পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজে পরীক্ষা চলাকালে সুগন্ধির (আতর) ঘ্রাণে পাঁচজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে দুজনকে আইসিইউতে এবং বাকিদের সাধারণ ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অসুস্থরা সবাই ৬ষ্ঠ শ্রেণির জবা শাখার শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে এক ছাত্রের দেয়া আতরের গন্ধ থেকে এসব শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন রংপুর পুলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজের উপাধ্যক্ষ সেলিম আহমেদ। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীরা হলো; তাসফিয়া আলম, নুসরাত আহমেদ বর্ণ, নাভা রহমান, ফাতিহাতুল জান্নাত ফিহা ও নূর-ই-আল আজমাইন। এদের বয়স ১৩-১৫ বছরের মধ্যে। অন্য তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অভিভাবকদের মাধ্যমে বাসায় পাঠিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। উপাধ্যক্ষ সেলিম আহমেদ বলেন, ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্র তার বন্ধুর হাতে সুগন্ধি জাতীয় আতর লাগিয়ে দেয়। এসময় আশপাশে থাকা কয়েকজন শিক্ষার্থী আতরের তীব্র গন্ধে শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকে। পরে কিছুক্ষণের মধ্যে তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদেরকে স্কুলের মেডিকেল সেন্টারে আগে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে তাদের অভিভাবকরা এসে অসুস্থদের রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সাংবাদিকদের তিনি আরও বলেন, ঘটনার সময় শ্রেণিকক্ষে অন্তত ৬০ জন ছাত্রছাত্রী উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা আগে থেকেই শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। তাদের অনেকের অ্যাজমা ও এ্যালার্জি রয়েছে। আমরা পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখছি। আতরের বোতলটি জব্দ করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে শ্বাসকষ্টজনিত কারণেই এসব শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হতে পারেন বলে জানান তিনি। চিকিৎসকের বরাত দিয়ে উপাধ্যক্ষ সেলিম আহমেদ জানান, পাঁচজনের মধ্যে তিনজনের শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো রয়েছে। বাকি দুজন সন্ধ্যা নাগাদ পুরোপুরি সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরতে পারবেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।এদিকে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সাথে রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কথা হয়। তাদের মধ্যে নুসরাত আহমেদ বর্ণের বাবা বেলাল আহমেদ জানান, তার মেয়ের শ্বাসকষ্ট বাড়ায় তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে। আরেক শিক্ষার্থীও আইসিইউতে রয়েছে। বাকি তিন শিক্ষার্থীর অবস্থা আগের চেয়ে ভালো হওয়াতে তাদের অন্য ওয়ার্ডে নেওয়া হয়েছে। আরেক শিক্ষার্থী তাসফিয়া আলমের বাবা ইমতিয়াজ আলম তাজ বলেন, দুপুর বারোটার সময় আমার মেয়ের অসুস্থতার খবর জানতে পারি। পরে স্কুলে গিয়ে দেখি অসুস্থদের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সেখান থেকে এখন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে আমার মেয়ের শারীরিক অবস্থা ভালো রয়েছে। তবে পরীক্ষা চলাকালীন সুগন্ধি ছড়ানোর এ ঘটনা দুঃখজনক। এদিকে জেলার সিভিল সার্জন ডা. মোঃ ওয়াজেদ আলী জানান, এখন সবাই শঙ্কামুক্ত। এটি তেমন গুরুত্বর সমস্যা নয়। তবে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা, অ্যালার্জি এবং অ্যাজমার কারণে ওই পাঁচ শিশু শিক্ষার্থী সুগন্ধির ঘ্রাণে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের চিকিৎসা চলছে। আমরা বিষয়টি মনিটরিং করছি।