রাবিপ্রবিতে অস্ত্রের মহড়ায় আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা, থানায় জিডি
স্টাফ রিপোর্টারঃ
রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনের কাজে চাঁদা দাবি করে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার হুমকি ও সশস্ত্র মহড়া দেওয়ার প্রতিবাদে থানায় সাধারণ ডাইরী করেছে রাবিপ্রবি’র সহকারী অধ্যাপক ও প্রক্টর সাদ্দাম হোসেন।
বর্তমানে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির এ দু’টি ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। এটি শিক্ষার্থী, শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মচারী এবং নির্মাণসংশ্লিষ্টদের মানসিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে বলে জানা গেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে ভারী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসীদের অবাধ বিচরণ, চাঁদা দাবি, হুমকি, মোবাইল ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ক্যাম্পাসে আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ক্যাম্পাসে বর্তমানে ১৬ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে তিনতলা প্রশাসনিক ভবন ও ১৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে তিনতলা একাডেমিক ভবনের নির্মাণকাজ গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে উভয় ভবনের নির্মাণকাজ শুরু করেছে চট্টগ্রামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমই-আরবিজেবি।
গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাত পৌনে ১০টার দিকে ৬ মিনিটের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ৭-৮ জনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়ক দিয়ে হেঁটে ক্যাম্পাসে ঢুকছে। তাদের মধ্যে ৪ জনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। এসময় ক্যাম্পাসে ঢোকার মুখে চেয়ারে বসা নিরাপত্তা প্রহরী অস্ত্রধারীদের দেখে উঠে দাঁড়ালে সন্ত্রাসীরা তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়।
সিসিটিভি ফুটেজে আরও দেখা যায়, ক্যাম্পাসে ঢুকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। পরে সন্ত্রাসীরা নির্মাণ শ্রমিকদের থাকার জন্য তৈরি করা টিনশেডের ঘরে ঢুকে তাদের ১০ থেকে ১২টি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। অস্ত্রধারীরা শ্রমিকদের ঘরে ঢুকে কয়েক মিনিট অবস্থান করার পর একই পথে চলে যায়।
রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন শীর্ষক প্রকল্প (২য় সংশোধিত) এর প্রকল্প পরিচালক এর পক্ষ থেকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
এ ব্যাপারে শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাঙ্গামাটি কোতোয়ালি থানায় জিডি করেছে। পাশাপাশি অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীকেও অবগত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সন্ত্রাসীরা আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা কাজে দুইবার চাঁদা দাবি করেছিল। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় ভবনের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে।
রাঙ্গামাটি কোতোয়ালি থানার ওসি সাহেদ উদ্দীন বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে, সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মোঃ আতিয়ার রহমান বলেন, দেড় কোটি টাকা চাঁদার দাবীতে রাবিপ্রবিতে অস্ত্রধারীদের হানা দেয়। এর আগে সিসিটিভি ফুটেজ না থাকায় কারা চাঁদা চাইতে এসেছিল কি না তা জানা যায়নি। তবে এবার কারা এসেছে আমরা জানতে পেরেছি। প্রতিষ্টানটির নিরাপত্তা, শিক্ষার্থীদের আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠা দুর করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন মহল বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখে শিক্ষা প্রতিষ্টানটিকে ক্যাম্প স্থাপন করবেন।