সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মুরারীচাঁদ কলেজ (এমসি) ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধূকে গণধর্ষণের মামলার আসামি মাহফুজুর রহমান মাসুমের রিমান্ড আবেদন শুনানিকালে আদালতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন মাসুম। তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও এ ঘটনায় জড়িত নন বলে আদালতে দাবি করেন।
বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম মো. আবুল কাশেমের আদালতে তার রিমান্ড আবেদন শুনানিকালে আসামিপক্ষের কোনো আইনজীবী না থাকায় ধর্ষণ মামলার আসামি মাসুম নিজে আদালতে তার বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন।
এমসি কলেজে গণধর্ষণ: ছাত্রলীগ নেতা মাসুমও ৫ দিনের রিমান্ডে
শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি মো. মাহফুজুর রহমান জানান, নিজেকে নির্দোষ দাবি করে মাসুম আদালতকে বলেছেন ‘মোবাইলে খবর পেয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে আমি এমসি ছাত্রাবাসে গিয়েছিলাম। তবে ধর্ষণের ঘটনার সাথে আমি জড়িত নই।’
এ সরকারি কৌশলী বলেন, মাসুম নিজের পক্ষে সাফাই গাওয়া শুরু করলে আদালত তাকে থামিয়ে দেন। এরপর রিমান্ড আবেদন শুনানি সম্পন্ন করে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এমসি কলেজে গণধর্ষণ: টাকা না পেয়েই স্বামীর সামনে স্ত্রীকে গণধর্ষণ
মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) অমূল্য কুমার চৌধুরী জানান, গণধর্ষণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরাণ থানার ওসি তদন্ত ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য আসামি মাহফুজুর রহমান মাসুমকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিয়ে এ ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করেন। আদালত পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ নিয়ে চাঞ্চল্যকর এই মামলায় এজাহারনামীয় সব আসামিসহ সিলেট রেঞ্জ পুলিশ ও র্যাব-৯ এর হাতে গ্রেফতারকৃত ৮ জনের মধ্যে ৭ জনকে ৫ দিন করে রিমান্ডে নিল পুলিশ। এর আগে গত সোমবার ও মঙ্গলবার দু’দফায় গ্রেফতার ৬ আসামিকে রিমান্ডে নেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাতে এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন এক গৃহবধূ। রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বামীর কাছ থেকে ওই গৃহবধূকে জোর করে তুলে নিয়ে ছাত্রাবাসের সামনে প্রাইভেটকারের মধ্যেই পালাক্রমে গণধর্ষণ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় কলেজের সামনে তার স্বামীকে আটকে রাখে দুজন।
এ ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী বাদী হয়ে শাহপরান থানায় মামলা করেছেন। মামলায় ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত আরও তিনজনকে আসামি করা হয়। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক রণজিৎ সরকারের অনুসারী বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় গত রোববার দুপুরে সিলেট মহানগর হাকিম ৩য় আদালতের হাকিম শারমিন খানম নিলার কাছে সেই রাতের ঘটনার জবানবন্দি দেন নির্যাতনের শিকার তরুণী। এসময় তিনি ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন। আদালত তরুণী গৃহবধূর জবানবন্দি রেকর্ড করে তাকে পরিবারের জিম্মায় দিয়ে দেন।