বাক স্বাধীনতার নামে সোশ্যাল মিডিয়া ও গণমাধ্যমে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকের প্রারম্ভিক ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এবং মন্ত্রিপরিষদ সদস্যরা সচিবালয়ের মন্ত্রিসভা কক্ষ থেকে ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নেন। পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সচিবালয়ে বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে কিছু আঁতেল শ্রেণির লোক আছে যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। এদেরকে কিছু বলা হলেই তারা বাক স্বাধীনতা খর্বের অভিযোগ তোলে। কিন্তু বাক স্বাধীনতার নামে সংঘাত সৃষ্টি করা কি বাক স্বাধীনতা?
তিনি বলেন, অপপ্রচারের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করতে হবে। চুপ করে বসে থাকলে হবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সত্যকে বিশ্বাস করাতে হয়তো সাময়িকভাবে কষ্ট হয়, কিন্তু সেটাই আমাদেরকে করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা শ্রেণি রয়েছে যারা সমাজকে ও সরকারকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। মানুষের জীবন নিয়ে তাদের চিন্তা নেই। কারণ, তাদের একটা অন্য উদ্দেশ্য থাকে। তাদেরকে কন্ট্রোল করতে গেলেই, তারা তাদের ষড়যন্ত্রটা সফল করতে পারে না বলে সমালোচনায় মুখর হয়।
তিনি বলেন, অপপ্রচার কখনো বাক স্বাধীনতা হয় না। এখন সোশ্যাল মিডিয়া, ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং ডিজিটাল যুগ, তাই যার যা খুশি বলে যাচ্ছে, যা খুশি অপপ্রচার করে যাচ্ছে আবার তাদের কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেই হৈ চৈ এবং নানা কথা ছড়াচ্ছে। কিন্তু কী কারণে হচ্ছে সেটা তারা দেখছে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের একটা দুর্বলতা রয়েছে, এটা নিয়ে (সংঘটিত আসল ঘটনা) কাউকে প্রশ্ন করলে কারণ আর বলে না। তারা ডিফেন্সিভে চলে যায়। এই মানসিকতাটাও ভালো নয়। যেটা সত্য সেটা বলতেই হবে।
তিনি বলেন, কোটার (বিসিএস) বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের ব্যাগে বড় বড় পাথর বা রামদা, কিরিচ ছিলো। বই-খাতা পাওয়া যায়নি। তখনতো অনেক নিউজও বের হয়েছে এবং অনেক ছবিও বের হয়েছে (মিডিয়া-পত্রিকায়)। সে সময় আওয়ামী লীগ অফিসে আক্রমণ ও পাথর ছুঁড়ে মেরে অফিস ভাংচুর এবং ৪০ থেকে ৫০ জন নেতা-কর্মীকে আহত করা হয়, যাদেরকে দেশ-বিদেশে চিকিৎসা করাতে হয়েছে এবং কারো কারো চিকিৎসা এখনো চলছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এটা নিয়ে কারো কোনো মাথা ব্যথা নাই। কিন্তু রাস্তায় নিজেরাই আগুন জ্বালিয়ে অপপ্রচার করার সময়ে পুলিশ তাদেরকে ধরে নিয়ে গেলে সেটাই সব থেকে বড় হয়ে যায়। পিলখানায় বিজিবি গেটের সামনে গন্ডগোল করা হচ্ছিল। অনেকে বিজিবি গেট দিয়েও ঢুকে গিয়েছিল। সেখানে বিজিবি যদি গুলি চালাতো তাহলে কি অবস্থা হতো?
সেই সময়ের একটি উদাহরণ টেনে শেখ হাসিনা আরো বলেন, জনগণকে বিভ্রান্ত করতে একজন টিভি অভিনেত্রী মিথ্যা স্টেটমেন্ট দেন এবং আওয়ামী লীগ অফিসে নিয়ে তাকে অসম্মান করা হয়েছে বলে তিনি গুজব ছড়ান। তার প্রচারিত ভিডিওতে রাস্তার সাইনবোর্ড থেকে ধরা পড়ে যে, তিনি নিজেই রাস্তার একপাশে দাঁড়িয়ে ভিডিও করে অপপ্রচার চালাচ্ছিলেন।