অনলাইন ডেস্কঃ
ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড ও একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে জিয়া, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন (সাংগঠনিক নাম শাহরিয়ার), আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, আকরাম হোসেন ওরফে আবির ও মো. আরাফাত রহমান। তবে আসামিদের মধ্যে জিয়া ও আকরাম পলাতক রয়েছে।
এ মামলায় মোট ৩৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। গত ২১ জানুয়ারি এ মামলার তৃতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তা কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম শেষ সাক্ষী হিসেবে আদালতে সাক্ষ্য দেন।
গত ২৭ জানুয়ারি কারাগারে আটক চার আসামি আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেন। রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনে ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট গোলাম সারোয়ার জাকির ছয় আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন। অন্যদিকে আসামি পক্ষে তাদের আইনজীবী নির্দোষ দাবি করে খালাস দাবি করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত সোয়া ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশে ব্লগার ও বিজ্ঞান বিষয়ক লেখক অভিজিৎ রায়কে সন্ত্রাসীরা চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। এসময় তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ আহত হন। অভিজিৎ ও রাফিদা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। অমর একুশে গ্রন্থমেলা উপলক্ষে তারা দেশে এসেছিলেন। মেলা থেকে বেরিয়ে বাসায় ফেরার পথে তারা হামলার শিকার হন। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে রাত সাড়ে ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এর পরের দিন ২৭ ফেব্রুয়ারি অভিজিতের বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অজয় রায় শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
২০১৯ সালের ১৩ মার্চ ঢাকা মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনসারীর আদালতে ছয়জনের বিরুদ্ধে ৩৪ জনকে সাক্ষী করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম।
২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। এরপর একই বছরের ১ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে পলাতক আসামি জিয়াউল ও আকরামের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি ও ক্রোকি পরোয়ানা জারি করেন।