ফরিদপুরে জিয়া হত্যা মামলায় তিন জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড
মামুনুর রশীদ/ফরিদপুর প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুরে একটি হত্যা মামলায় তিন জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে ১০ হাজার টাকা জরিমান ও অনাদায়ে আরও ৬ মাসের জেল। মামলার অন্যান্য ৬ আসামীকে খালাস দেয় বিচারক। রায়ের সময় আসামীরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আজ বুধবার বিকেলে অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজের ২নং আমলী আদালতের বিজ্ঞ বিচারক সিহাবুল ইসলাম ফরিদপুর সদর উপজেলার গঙ্গাবদ্দী গ্রামের জিয়া মোল্লার হত্যা মামলায় এই রায় দেন। সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা সকলে পশ্চিম গঙ্গাবদ্দী গ্রামের মৃত মোহম্মদ সরদারে ছেলে লুৎফর সরদার, শাহাদত সরদার ও মান্নান সরদার।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দিকে ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়েনের পশ্চিম গঙ্গাবদ্দী গ্রামের জিয়া মোল্লা ও তার চাচাতো ভাই জিয়া মাতুব্বর মোটর সাইকেলে করে বাড়ীতে ফিরতে ছিলেন। পথেমধ্যে গঙ্গাবদ্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাশের রাস্তায় তাদের মোটরসাইকেলের গতি রোধ করে।
পূর্ব শত্রুতার জের ধরে জিয়া মোল্লা ও তার চাচাতো ভাইকে ধারালা অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্বক আহত করে। ঘটনার রাতেই জিয়া মোল্লা হাসপাতালে মারা যায়। নিহত জিয়ার বাবা সাহিদ মোল্লা ১০জনকে এজাহার ভূক্ত আসামী করে কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ফরিদপুরের পরিদর্শক মো. এমারত হোসেন ও মো. শাহজাহান মিয়া তদন্ত করেন। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক শেখ শাহ আলম তদন্ত করে নয় জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার বাকি ছয় আসামিকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।
রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবি মোঃ সানোয়ার হোসেন বলেন, জিয়া মোল্লা হত্যা মামলায় দীর্ঘ স্বাক্ষ্য প্রমান শেষে অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজের ১নং আমলী আদালতের বিজ্ঞ বিচারক সিহাবুল ইসলাম এই রায় দেন। রায়ে চার্জশীট ভূক্ত ৯জন আসামীর মধ্যে স্বাক্ষ্যপ্রমানের ভিত্তিতে সন্দেহাতিতভাবে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ৩ জন আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমান, অনাদায়ে ৬ মাসের সাজা প্রদান করেন বিজ্ঞ বিচারক। দুই জন পলাতক ছাড়া সাজাপ্রাপ্ত আসামীসহ ৭ জন আদালতে উপস্থিত ছিল। মামলার তিনজন আসামী বাদে বাকীদের খালাস দেয়া হয়। মামলার রায়ে বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন এ রায়ে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হবে এবং সমাজে অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে। রায়ের পর পর পুলিশ সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের আদালত থেকে জেল হাজতে নিয়ে যায়।