শার্শা হাসপাতালে চিকিৎসক ও জনবল স্বল্পতায় চিকিৎসা সেবা ব্যাহত
বেনাপোল প্রতিনিধিঃ
যশোরের শার্শা উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসক ও জনবল স্বল্পতার কারণে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। বাইরে এবং ভিতরে চাকচিক্য পরিবেশ। বহির্বিভাগে রোগীদের লম্বা লাইন। বাইরের পরিবেশ দেখে বোঝার উপায় নেই উপজেলা হাসপাতালে জনবল সংকটের কারণে জর্জরিত। চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত করাসহ নানা সংকট চলছে হাসপাতালে।
জানা গেছে, শার্শা উপজেলার ১১ ইউনিয়ন এবং ১টি পৌর সভার প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্য সেবার একমাত্র ভরসা ৫০ শয্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতাল। ১৯৬২ সালে নির্মিত হাসপাতালটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নিত হয়ে এখন শার্শা ও ঝিকরগাছা উপজেলার একাংশের মানুষের নির্ভরতার একমাত্র জায়গা।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কোনো সুযোগ-সুবিধাই বাড়েনি এ হাসপাতালে। লোকবল, যন্ত্রপাতি ও চিকিৎসা সামগ্রীসহ সবকিছু এখনও পুরোনো ধাঁচের। হাসপাতালে প্রতিদিন তিন শতাধিক রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। ভর্তি হন ২৫ থেকে ৩০ জন।
তথ্য অনুযায়ী, হাসপাতালে মেডিক্যাল কর্মকর্তার পদ সংখ্যা ২২টি থাকলেও খাতা-কলমে আছেন ৭জন আর কর্মরত ৪জন। বাকি ৩জন অন্যত্র ডিউটিতে থাকেন। ৩য় শ্রেণীর কর্মচারী থাকার কথা ১৪ জন কিন্তু আছে ৮জন। ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচার্রী থাকার কথা ৫জন আছে ২জন। এমএলএস ৫জনের মধ্যে আছে ১জন। পরিচ্ছতা কর্মী ৫জনের মধ্যে আছে ১জন। হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মী ২জনের মধ্যে আছে ১জন। অফিস সহকারী ৩ জনের ১ জনও নাই।
২০১৫ সালের ৩ মার্চ থেকে হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও এখানে এখনো চাহিদা মতো কোনো জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি। বহির্বিভাগে টাকা দিয়ে টিকিট কেটেও চিকিৎসক না থাকায় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।
হাসপাতালটিতে একমাত্র এক্স-রে মেশিনটি প্রায় সময়ই থাকে নষ্ট। মাঝেমধ্যে ঠিক হলেও থাকে না ফ্লিল্ম। অনেক মুল্যমানের দুটি অপারেশন থিয়েটার থাকলেও তা ডাক্তারের অভাবে পড়ে থাকায় গরিব ও অসহায় রোগীদের বাধ্য হয়ে ৩৬ কিলোমিটার দূরে যশোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যেতে হয়। অথবা এলাকার কোন প্রাইভেট ক্লিনিকে অধিক টাকা দিয়ে অপারেশন করাতে হয়। হাসপাতালে প্যাথলজি বিভাগ থাকা সত্তে¡ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রোগীদের বাইরের ক্লিনিকে পাঠানো হয়। ফলে উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সচেতন মহলে।
জরুরি বিভাগে সাধারণ চিকিৎসা দেওয়া, রোগীদের অতি নিম্নমানের খাবার ও নোংরা বিছানা দেওয়া হয়। শৌচাগারগুলোর অবস্থা আরও শোচনীয়। সার্জারি রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পেলেও হাসপাতালে নেই কোনো সার্জারি, গাইনি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ।
শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আঃ সালাম জানান, হাসপাতালটি খাতা-কলমে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও প্রয়োজনীয়সংখ্যক জনবল বাড়ানো হয়নি। যে কারণে জনগণের চাহিদা মতো সেবা দিতে পারছেন না শুধু চিকিৎসক ও জনবলের অভাবে।