জয়পুরহাটে নিজ দায়িত্বে ট্রান্সফর্মার পাহারার ব্যবস্থা করতে মাইকিং
জয়নাল আবেদীন জয়/জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় সাম্প্রতিক সময়ে সেচ ও শিল্পের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার চুরির হিড়িক বেড়েছে। চলতি নভেম্বর মাসের ১১ দিনে ১৯টি সেচ ও শিল্পের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটেছে।
ট্রান্সফর্মার চুরি রোধে নিজ দায়িত্বে পাহারার ব্যবস্থা নিতে জয়পুরহাট পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে। রোববার সকালে আক্কেলপুর পৌরশহরসহ ওই এলাকায় মাইকিং করা হয়।
জয়পুরহাট পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির আক্কেলপুর জোনাল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ কার্যালয়ের আওতায় ৬৬১টি গভীর-অগভীর নলকূপ রয়েছে। প্রতিটি গভীর-অগভীর নলকূপে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার রয়েছ। প্রতি বছরই ফসলি মাঠের গভীর-অগভীর নলকূপের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার চুরি হচ্ছিল।
চলতি বছরের গত অক্টোবর মাসে ১০টি ও নভেম্বর মাসের গত ১১ দিনে ১৯টি ট্রান্সফর্মার চুরি হয়েছে। এর মধ্যে গত ৮ নভেম্বর দিবাগত রাতে পৃথক চারটি স্থান থেকে ১২টি ট্রান্সফর্মার চুরি হয়েছে। ট্রান্সফর্মার চুরির ঘটনায় পল্লীবিদ্যুৎ সমতির পক্ষে থানায় এজাহার দায়ের করা হয়েছে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তারা জানান, সেচ ও শিল্প সংযোগে ৫ কেভি, ১০ কেভি, ১৫ কেভি ও ২৫ কেভি ক্ষমতা সম্পূর্ণ ট্রান্সফর্মার লাগানো হয়। ৫ কেভির ট্রান্সফর্মারের দাম ৪২ হাজার ৬শ টাকা, ১০ কেভির দাম ৬৭ হাজার টাকা, ১৫ কেভির দাম ৭৯ হাজার টাকা ও ২৫ কেভির দাম এক লাখ ৮ হাজার টাকা।
প্রথম দফায় চুরি হলে গ্রাহককে সমিতিতে অর্ধেক দাম দিতে হয়। দ্বিতীয় দফায় চুরি হলে গ্রাহকে সমিতিতে পুরো দাম দিয়ে কিনতে হয়।
চুরি যাওয়া প্রতিটি ট্রান্সফর্মারে ১২ থেকে ১৫ কেজি তামার তার থাকে। চোরেরা প্রতিকেজি তামার তার ১ হাজার থেকে ১২শ টাকায় বিক্রি করে।
কয়েকজন গভীর ও অগভীর নলকূপের মালিক জানান, দুই বারে প্রায় এক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তাই তারা নিজেরাই এখন ট্রান্সফরমার পাহারা দিচ্ছেন।
জয়পুরহাট পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির আক্কেলপুর জোনাল কার্যালয়ের ডিজিএম আব্দুর রহমান বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আক্কেলপুর উপজেলায় বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার চুরির ঘটনা বেড়েছে। শুধু নভেম্বর মাসের গত ১১ দিনে ১৯টি ট্রান্সফর্মার চুরির ঘটনা ঘটেছে। সমিতির পক্ষে থানায় এজাহার দেওয়া হয়েছে। পুলিশের একার পক্ষে ট্রান্সফর্মার চুরি রোধ করা সম্ভব নয়। সেচ ও শিল্প সংযোগের মালিকদের নিজ দায়িত্বে ট্রান্সফর্মার পাহারার ব্যবস্থা করতে সমিতির পক্ষ থেকে রোববার এলাকায় মাইকিং করে সচেতন করা হয়েছে।
আক্কেলপুর থানার ওসি শাহিনুর রহমান বলেন, ট্রান্সফর্মার ও মিটার চুরির ঘটনায় থানায় মামলা রয়েছে। ইতোমধ্যে ট্রান্সফর্মার ও মিটার চোর চক্রের সদস্যদের আটক করা হয়েছে। এই চক্রের সদস্যদের আটক করতে পুলিশেরর অভিযান অব্যহত রয়েছে।