শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ এবং প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার ও এক দফা দাবিতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ বিকেল ৩টায় বিক্ষোভ মিছিল করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এদিকে মহান স্বাধীনতাকে কটাক্ষ, রাজাকারের সাফাই এবং সাধারণ শিক্ষার্থী ও নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে দুপুরে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার (১৫ জুলাই) রাত ৯টা ৩৫ মিনিটের দিকে দোয়েল চত্বর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রীয় শীর্ষ পর্যায় থেকে আমাদের আন্দোলন প্রশ্নবিদ্ধ করতে রাজাকার তকমা দেওয়া হয়েছে। আমাদের রাজাকার বলুক আর যাই বলুক আমরা আমাদের দাবি আদায় করবো।
নাহিদ ইসলাম বলেন, এখন এ আন্দোলন আর ছাত্রদের আন্দোলন নেই। যেখানে রাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায় থেকে আমাদের আন্দোলন নিয়ে এমন মন্তব্য করেছে, সেখানে এই আন্দোলন শুধু ছাত্রদের নেই। সাধারণ মানুষকে আন্দোলনে নামার জন্য আহ্বান জানাই।
তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ; এরপর প্রয়োজনে সারাদেশে অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হবে।
রাতে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এক বিবৃতিতে বলেন, বাঙালির মহান স্বাধীনতাকে কটাক্ষ, একাত্তরের ঘৃণিত গণহত্যাকারী রাজাকারদের প্রতি সাফাই, আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীলতা তৈরি এবং সাধারণ শিক্ষার্থী ও নেতাকর্মীদের ওপর বর্বর হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
সোমবার দিনভর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের পর রাতেও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৩০০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে সন্ধ্যার পর বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ক্যাম্পাস চত্বর থেকে ফিরে গেছেন পুলিশ সদস্যরা।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রভোস্ট কমিটির একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শিক্ষার্থীদের বিষয়ে পাঁচটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সিদ্ধান্তগুলো হলো-
১. শিক্ষার্থীরা স্ব স্ব হলে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করবেন;
২. প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিধানে সার্বক্ষণিকভাবে হলে অবস্থান করবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন;
৩. হলসমূহে কোনো বহিরাগত অবস্থান করতে পারবেন না;
৪. যেকোনো ধরনের গুজব ও অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান জানানো হচ্ছে; এবং
৫. সকলকে নাশকতামূলক কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য বলা যাচ্ছে। কেউ নাশতকতামূলক কাজে জড়িত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার জন্য আহ্বান জানানো হয়।