কিশোরগঞ্জ একটি সম্ভাবনাময় জেলা বলেছেন বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে জেলার পুরাতন স্টেডিয়ামে ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা প্রদান সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়াল বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর পর আমরা ভয়হীনভাবে কথা বলার স্বাধীনতা পেয়েছি। বিনিময়ে দিতে হয়েছে অনেকগুলো তাজা প্রাণ। শুধু কিশোরগঞ্জে ১৭জন মানুষকে হারিয়েছি। আর সেই শহীদ পরিবাগুলোর সদস্যের সম্মান জানানোর জন্য আমরা আজ একত্রিত হয়েছি। আজকে কিশোরগঞ্জের সমাবেশে অধিকাংশ মানুষ কিশোরগঞ্জের। ২-৪ জন অন্য এলাকার থাকতে পারেন। কিশোরগঞ্জকে সম্ভাবনা হিসেবে কিভাবে গড়ে তুলতে দুই একটা সম্ভাবনার ক্ষেত্র তুলে ধরতে চাই। বোরো মৌসুমে আপনাদের এখানে প্রচুর ধান হয়। আপনারা কি জানেন আপনারা যে ধান উৎপাদন করেন তা সমগ্র বাংলাদেশের ১৬ শতাংশ ধান উৎপন্ন হয় কিশোরগঞ্জে। যদি সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা সম্ভব হয় কৃষক ভাইয়ের প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় তাহলে উৎপাদন ১৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ কিংবা ২৫ শতাংশে উন্নীত করা সম্ভব। আর একটি সম্ভাবনার ক্ষেত্রে অষ্টগ্রামের হাওর। এখানে বিভিন্ন প্রকার মাছ পাওয়া যায়। এ মাছের চাহিদা বিশাল চাহিদা সম্পন্ন করে অষ্টগ্রামে হাওর। পোশাকশিল্প যদি বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুর্দা অর্জন করা যায় তাহলে কেন আমরা মাছ চাষ করে বিদেশে রপ্তানি করতে পারবো না। জেলেদের সঠিক প্রশিক্ষণ দিয়ে মাছ রপ্তানি করে বিদেশে বাংলাদেশকে পরিচিত করে তুলব। আমাদেরকে বিষয়টিকে এভাবে চিন্তা করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের মাছের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানি করতে সক্ষম হবে। এতে শুধু মাছ রপ্তানিই হবে না এর সাথে বিভিন্ন প্রক্রিয়া যুক্ত হবে। মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। এই কাজগুলোকে করতে পারবে জনগণ দ্বারা নির্বাচিত সরকার। বেকার যারা থাকবে তাদের তাদের কর্মসংস্থ হবে। অষ্টগ্রাম এর পনির সম্পর্কে অনেকে জানেন না। পনির নিয়ে যদি সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়, বিশ্বের বুকে আমরা পনির ছড়িয়ে দিতে পারব এবং সুনাম অর্জন করব। এর মাধ্যমে বহু ভাইবোনের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। তারেক রহমান বলেন, জনগণের রাজনৈতিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। ১৭ বছর ধরে স্বৈরাচারী সরকারের দোসররা টাকা পাচার করে বিদেশে ঘরবাড়ি তৈরি করেছে। কিন্তু বিএনপি তা করবে না। বিএনপির লক্ষ্য মানুষকে অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি করা। প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মীর মনের মধ্যে একটি বাসনা থাকে, তারা সুযোগ পেলে তার এলাকার জন্য একটি রাস্তা, একটি ব্রিজ, এশটি স্কুল- হাসপাতাল স্থাপন করা। বিএনপি দেশ পরিচালনায় সুযোগ পেলে সে কাজটিই করবে। বাংলাদেশকে সামনে নিয়ে যাওয়া, বাংলাদেশের মানুষকে সাবলম্বী করে তোলা, বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করতে চাই এটি হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য।
বিকেল ৩ টায় কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেলা ১২টার আগে থেকেই মিছিল নিয়ে আসতে থাকেন দলটির নেতাকর্মীরা। কিশোরগঞ্জ সদর, অষ্টগ্রাম, ইটনা, কটিয়াদী, ভৈরব, করিমগঞ্জ, বাজিতপুর, তাড়াইল, হোসেনপুর, পাকুন্দিয়া, কুলিয়ারচর, মিঠামইন, নিকলী এলাকার নেতাকর্মীরা হাতে জাতীয় ও দলীয় পতাকা, জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান প্রতিকৃতি সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে গণসমাবেশে যোগ দেন। এ সময়ে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো কিশোরগঞ্জ জেলা পুরাতন স্টেডিয়াম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরিফুল আলম,বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বিশেষ অতিথি নজরুল,বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সসহ বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এর আগে অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।