ঢাকা ০৬:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
Logo খাগড়াছড়িতে ৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস পালিত Logo পাহাড়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বাড়াতে টার্গেট সেনাবাহিনী Logo খাগড়াছড়িতে সেনা ক্যাম্প স্থাপনে বাধা প্রদানের প্রতিবাদে ঢাবিতে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিল Logo একটি স্নাইপার বুলেটই যথেষ্ট: বাঙালি নেতাকে কেএনএফ-এর হুমকি! Logo খাগড়াছড়িতে নাশকতার পরিকল্পনা করছে ইউপিডিএফ Logo সামনে ঘোর অন্ধকার-আমরা ঘুমাচ্ছি Logo খাগড়াছড়িতে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে যুবদলের প্রতিষ্ঠা বাষিকী পালিত Logo কিশোরগঞ্জে ৫ দফা দাবিতে জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল Logo হোসেনপুরে পুলিশের হাত থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিল বিএনপি নেতারা Logo কিশোরগঞ্জ শহরে অটোরিকশার যানজট ও ফুটপাত দখল ভাঙতে মাঠে নামলেন ডিসি ফৌজিয়া খান

ভাঙ্গায় সেলফি তোলা কেন্দ্র করে ৫ গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত-৪০

Doinik Astha
Doinik Astha
  • আপডেট সময় : ১০:৪৯:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৩
  • / ১০২৭ বার পড়া হয়েছে

ঈদ পরবর্তী সময়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে সঙ্ঘটিত সংঘাত ও সংঘর্ষের জনপদে পরিণত হয়েছে। তুচ্ছ ঘটনায় প্রতিনিয়ত সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে সাধারণ গ্রামবাসী।

সেই সূত্রতায় গ্রামের সেতুর উপর দাঁড়িয়ে অযাচিত হয়ে সেলফি তোলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলার আলগি ইউনিয়নের বিবদমান পাঁচ গ্রামবাসীর মধ্যে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছে। গুরুতর আহত আসাদ মাতুব্বর, হারু শিকদার,ও অজ্ঞাত এই তিনজনকে ঢাকায় ও অহিদুল মাতব্বর, ওবায়দুর মোল্লা দুজনকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্যদের ভাঙ্গা হাসপাতাল ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে সেলর তোলাকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রতায় রাতে চার ঘন্টাব্যাপী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে বেধড়ক লাঠি চাজ ও শব্দ বোমা নিক্ষেপ করে গোটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনায় ছত্র ভঙ্গ হয়ে যায় বিক্ষিপ্ত গ্রামবাসী। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকেলে নাওরা গ্রামের জয়নাল মাতুব্বরের ছেলে সিয়াম ও একই গ্রামের মরিয়মের ছেলে বাবুর সাথে গুলপানদী গ্রামের আসমতের ছেলে ও শান্ত বিশ্বাসের ছেলে বাবু বিশ্বাসের, (দুই গ্রামের মাঝে সেতুর উপর দিয়ে যাতায়াতের সময় পথচারী মেয়েদের ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে) কথা কাটাকাটির একটি পর্যায়ে তারা চরম বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনার জের ধরে রাতেই উভয় পক্ষের সমর্থকগ্রামবাসী সঙ্গবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্র ঢাল, সরকি, টেটা, রামদা ও ইট পাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। বেশ কিছু সময় ধরে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চালতে থাকে দুই পক্ষের। প্রায় তিন ঘন্টার অধীক সময়ে পর্যন্ত সংঘর্ষ চলতে থাকে। এসময় নাওরা গ্রামের পক্ষে অবস্থান নেয় অপরপট্টি, সুলনা, চাংড়া ও শুয়াদী গ্রামের লোকজন। এই পাঁচ গ্রামের নেতৃত্ব দেন এলাকার ইউপি সদস্য মজিবর মেম্বার, মতিন মুন্সী, মিরান মাতুব্বর ও মিরাজ মাতুব্বর। অপরপক্ষে গুনপালদী গ্রামের একক নেতৃত্ব দেন জামির মোল্লা। যে একটি গ্রামের বিপক্ষে চারটি গ্রামের লোকজন ঝাপিয়ে পড়ে। এসময় সেখানে একটি রাতের ডামাডোল রনক্ষেত্রে পরিণত হয় বলে জানিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ম ম ছিদ্দিক মিয়া। পরে খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনা স্থলে পৌঁছে ব্যাপক লাঠিচার্জ করে উভয় পক্ষের লোকজনকে ছত্র ভংগ করে দেয়। এসময় নয়জনকে আটক করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। আলগী ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা লিটু মোল্লা বলেন, গ্রামের নদীর উপর একটি সেতু রয়েছে। প্রতিদিন বিকেলে সেতুর দুইপাড়ের উঠতি বয়সের যুবকেরা আড্ডা করে থাকে। আড্ডার ফাঁকে যুবকেরা সেতুর উপর দিয়ে আসা যাওয়ার সময়ে মেয়েদের প্রায় ইভটিজিং করে থাকে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে অনেকে প্রতিবাদ করলেও সহসায় বখাটে ছেলেরা থেমে থাকেনি। গ্রামের বসতি কালাচাঁদ বলেন, সম্প্রতি সেতুর উপর মাদক কারবারি ও মাদক সেবনকারীদের আবাদ শুরু হয়েছে। সেতুর উপর দিয়ে জনগণ চলাচল করতে বেশ আতংকিত হয়েই তাদেরকে চলাচল করতে হয় বৈকি? অনেক দিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভের সূত্রতায় রাতের সংঘর্ষ সংঘটিত বলে নিজের অভিমত প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জিয়ারুল ইসলাম বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে এরা উভয় গ্রুপ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে সংঘর্ষ না করতে থানায় মুচলেকা দিয়ে মীমাংসার জন্য সময় নিয়েছেন। তবে যদি কেউ অভিযোগ করে তাহলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগস :

ভাঙ্গায় সেলফি তোলা কেন্দ্র করে ৫ গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত-৪০

আপডেট সময় : ১০:৪৯:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৩

ঈদ পরবর্তী সময়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে সঙ্ঘটিত সংঘাত ও সংঘর্ষের জনপদে পরিণত হয়েছে। তুচ্ছ ঘটনায় প্রতিনিয়ত সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে সাধারণ গ্রামবাসী।

সেই সূত্রতায় গ্রামের সেতুর উপর দাঁড়িয়ে অযাচিত হয়ে সেলফি তোলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলার আলগি ইউনিয়নের বিবদমান পাঁচ গ্রামবাসীর মধ্যে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছে। গুরুতর আহত আসাদ মাতুব্বর, হারু শিকদার,ও অজ্ঞাত এই তিনজনকে ঢাকায় ও অহিদুল মাতব্বর, ওবায়দুর মোল্লা দুজনকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্যদের ভাঙ্গা হাসপাতাল ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে সেলর তোলাকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রতায় রাতে চার ঘন্টাব্যাপী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে বেধড়ক লাঠি চাজ ও শব্দ বোমা নিক্ষেপ করে গোটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনায় ছত্র ভঙ্গ হয়ে যায় বিক্ষিপ্ত গ্রামবাসী। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকেলে নাওরা গ্রামের জয়নাল মাতুব্বরের ছেলে সিয়াম ও একই গ্রামের মরিয়মের ছেলে বাবুর সাথে গুলপানদী গ্রামের আসমতের ছেলে ও শান্ত বিশ্বাসের ছেলে বাবু বিশ্বাসের, (দুই গ্রামের মাঝে সেতুর উপর দিয়ে যাতায়াতের সময় পথচারী মেয়েদের ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে) কথা কাটাকাটির একটি পর্যায়ে তারা চরম বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনার জের ধরে রাতেই উভয় পক্ষের সমর্থকগ্রামবাসী সঙ্গবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্র ঢাল, সরকি, টেটা, রামদা ও ইট পাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। বেশ কিছু সময় ধরে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চালতে থাকে দুই পক্ষের। প্রায় তিন ঘন্টার অধীক সময়ে পর্যন্ত সংঘর্ষ চলতে থাকে। এসময় নাওরা গ্রামের পক্ষে অবস্থান নেয় অপরপট্টি, সুলনা, চাংড়া ও শুয়াদী গ্রামের লোকজন। এই পাঁচ গ্রামের নেতৃত্ব দেন এলাকার ইউপি সদস্য মজিবর মেম্বার, মতিন মুন্সী, মিরান মাতুব্বর ও মিরাজ মাতুব্বর। অপরপক্ষে গুনপালদী গ্রামের একক নেতৃত্ব দেন জামির মোল্লা। যে একটি গ্রামের বিপক্ষে চারটি গ্রামের লোকজন ঝাপিয়ে পড়ে। এসময় সেখানে একটি রাতের ডামাডোল রনক্ষেত্রে পরিণত হয় বলে জানিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ম ম ছিদ্দিক মিয়া। পরে খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনা স্থলে পৌঁছে ব্যাপক লাঠিচার্জ করে উভয় পক্ষের লোকজনকে ছত্র ভংগ করে দেয়। এসময় নয়জনকে আটক করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। আলগী ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা লিটু মোল্লা বলেন, গ্রামের নদীর উপর একটি সেতু রয়েছে। প্রতিদিন বিকেলে সেতুর দুইপাড়ের উঠতি বয়সের যুবকেরা আড্ডা করে থাকে। আড্ডার ফাঁকে যুবকেরা সেতুর উপর দিয়ে আসা যাওয়ার সময়ে মেয়েদের প্রায় ইভটিজিং করে থাকে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে অনেকে প্রতিবাদ করলেও সহসায় বখাটে ছেলেরা থেমে থাকেনি। গ্রামের বসতি কালাচাঁদ বলেন, সম্প্রতি সেতুর উপর মাদক কারবারি ও মাদক সেবনকারীদের আবাদ শুরু হয়েছে। সেতুর উপর দিয়ে জনগণ চলাচল করতে বেশ আতংকিত হয়েই তাদেরকে চলাচল করতে হয় বৈকি? অনেক দিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভের সূত্রতায় রাতের সংঘর্ষ সংঘটিত বলে নিজের অভিমত প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জিয়ারুল ইসলাম বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে এরা উভয় গ্রুপ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে সংঘর্ষ না করতে থানায় মুচলেকা দিয়ে মীমাংসার জন্য সময় নিয়েছেন। তবে যদি কেউ অভিযোগ করে তাহলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।