নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে কর্মরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে ৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী নাছিমুজ্জামানের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মাঠে নেমেছে একটি তদন্ত কমিটি। ঘুষের টাকা গ্রহণের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ভুক্তভোগী নাছিমুজ্জামানের লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২৩ জানুয়ারি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে উপসহকারী কৃষি অফিসার পদে মোট ১৬৫০ জন লোক নিয়োগ দেওয়া হবে, এমনি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তি দেখে নাছিমুজ্জামান নামে এক যুবক সে পদে আবেদন করেন। তিনি জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার যোগীভিটা গ্রামের রফিকুল আলম আকন্দের ছেলে।
সেই পদেই চাকরি দেওয়ার কথা বলে মৌখিক পরীক্ষার আগে ও পরে দফায় দফায় চেক ও নগদে মোট ৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা ঘুষ নেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন। তবে নাসিমুজ্জামানের চাকরি না হওয়ায় তিনি তার দেওয়ার ঘুষের টাকা আনোয়ারের কাছে ফেরত চান। কিন্তু আনোয়ার টাকা ফেরত না দিয়ে নাসিমুজ্জামানকে হুমকি-ধামকি দেন।
টাকা ফেরত ও সুষ্ঠু প্রতিকার চেয়ে গত ১৭ আগস্ট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রাজশাহী অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন নাছিমুজ্জামান। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৫ সেপ্টেম্বর জেলার আত্রাই কৃষি কর্মকর্তা কেএম কাউছার হোসেনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গত সোমবার অভিযুক্ত আনোয়ারের অফিসে এসে ঘটনার তদন্ত করেন।
নাছিমুজ্জামান বলেন, ‘চাকরি না হওয়ায় আমার দেওয়া ৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা ফেরত চাইলে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন আমাকে বার বার হুমকি-ধামকি দিয়েছেন। তাই এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চেয়ে আমি অভিযোগ দায়ের করেছি।’
এ ব্যাপারে কথা বলতে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের মোবাইলে কয়েকবার ফোন করা হয়, কিন্তু তিনি রিসিভ করেননি।
রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় গত সোমবার তদন্ত হয়েছে। তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।’
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কেএম কাউছার হোসেন বলেন, ‘তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে। তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’
এ ব্যাপারে নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ছামছুল ওয়াদুদ বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন আংশিক হাতে পেয়েছি। পুরো কাগজপত্র হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’