লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাট পৌরসভা নির্বাচনে টানটান উত্তেজনার মধ্য দিয়েই শেষ হলো ভোট গ্রহণ। গণনা শেষে ফালাফাল জানানো হয়েছে। পৌর পিতা নির্বাচিত হয়েছেন নারিকেল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম স্বপন। তিনি সর্বমোট ১১০৩৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি নৌকা প্রতীক নিয়ে মোফাজ্জল হোসেন সর্বমোট ভোট পেয়েছেন ৯০৫৫।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী আমিনুল ইসলামহাতপাখা প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ৭৮০। বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোশারফ হোসেন রানা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ৫১০৮। জাতীয় পার্টি থেকে মনোনীত প্রার্থী লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে ১৯৭১ ভোট পেয়েছেন। এছাড়াও নয়টি ওয়ার্ডে ৯ জন কাউন্সিলর এবং ৩ মহিলা কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন।
রোববার (১৪ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮ টা থেকে শুরু হয়ে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে ভোট গ্রহণ চলতে থাকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সকাল ১০টার দিকে ভোট গ্রহণ চলাকালীন সময় কয়েকটি কেন্দ্রে বিক্ষিপ্ত ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোশারফ হোসেনের রানার পাঁচ জন সমর্থক আহত হন। এদিকে কেন্দ্রের ভিতরে ঢুকে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারদের বিরুদ্ধে ইভিএমের চিপ খুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে বিদ্রোহী প্রার্থীর।
রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পৌরসভার চারটি কেন্দ্রে এ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় আহত হন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যাক্ষ হাবিবুর রহমান হাবিব, সুফি তাহেরুল ইসলাম, আব্দুল জলিলসহ মোট ছয় জন। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, লালমনিরহাট পৌরসভার ভোটগ্রহণ শুরু হলে বিক্ষিপ্তভাবে চারটি কেন্দ্রে প্রার্থী’র সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
দক্ষিণ বত্রিশ হাজারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গিয়াস উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়, রেলওয়ে চিল্ড্রেন পার্ক শিশু স্কুল, সাপ্টানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। আহতরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। অপরিদকে বিএনপি’র মনোনীত মেয়র প্রার্থী মোশারফ হোসেন রানা ও জাতীয় পাটির মনোনীত প্রার্থী এস এম ওয়াহিদুল হাসান সেনা অভিযোগ করে বলেন ক্ষমতাসীন দলের লোকজন বিএনপি’র ও জাতীয় পাটির এজেন্টদেরকে ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দিচ্ছে।
এদিকে রেলওয়ে চিলড্রেন স্কুলে ভোটগ্রহণে অনিয়মের অভিযোগ এনে আশরাফুল-সহ আরো অনেক ভোটার বলেন, কেন্দ্রের ভেতরে জোর করে একজন তার ভোটটি একটি বিশেষ প্রতীকে দিয়ে দিয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম স্বপন অভিযোগ করে বলেন, সরকারী দলের প্রার্থীর পক্ষে আওয়ামী লীগের লোকজন জোর করে ভোট দিচ্ছেন। আমার প্রতীকের লোকজনকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পৌরসভার ভোট গ্রহন ১৮টি কেন্দ্রে হচ্ছে। এসব কেন্দ্রের বেশিরভাগে স্বতন্ত্র প্রার্থী নারিকেল গাছ মার্কার এজেন্ট ও সমর্থকদের কাছাতে দিচ্ছে না সরকার দলীয় ক্যাডাররা।
এ বিষয়ে প্রশাসনকে বার বার অভিযোগ করা হলেও তারা নীরবতাই পালন করছেন। তবে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর উচ্ছ্বাসের সাথে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন রেজাউল করিম স্বপন। বলেন, নগরবাসীর নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতের পাশাপাশি পৌরসভাকে একটি জনবান্ধব, আধুনিক, পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে গড়ে তোলাই হবে প্রথম চ্যালেঞ্জ। আর এ লক্ষ্যে সকলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে উন্নয়ন কাজ ত্বরান্বিত করার প্রত্যয় ব্যক্তও করেন তিনি।