কিশোরগঞ্জে “নারীদের ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচী” (Women’s Cancer Control Program) এর কর্মসূচী অবহিতকরণের উদ্দেশ্যে কিশোরগঞ্জের স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারগণ ও জেলার সকল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকরতাগণের সহিত এক মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) সকাল ১১টায় জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে নারীদের ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচী অবহিতকরণ ও মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নারী উদ্যোগ কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক মাশহুদা খাতুন শেফালী’র পরিচালনায় ও কিশোরগঞ্জ সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএমএ সভাপতি ডাঃ মোঃ মাহবুবুল ইকবাল, স্বাচিপ সভাপতি ডাঃ দীন মোহাম্মদ, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ডাঃ মোঃ হাবিবুর রহমান, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মোঃ হেলাল উদ্দিন, বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মোঃ এম এ ওয়াহাব বাদল, ২৫০ বিশিষ্ট শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ নূর মোঃ শামসুল আলাম এছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন কিশোরগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন অফিসের কর্মকর্তাগণ এবং কিশোরগঞ্জ জেলার সকল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাগণ। অনুষ্ঠানের শুরুতে নির্বাহী পরিচালক মাশহুদা খাতুন শেফালী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকাল, তিন দশকের কার্যক্রম ও নারীদের ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচীর বিভিন্ন দিক ও কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। তিনি জানান, নারী উদ্যোগ কেন্দ্র (নউক) একটি বেসরকারী নারী উন্নয়ন সহযোগী সংগঠন। সমাজের সর্বস্তরে নারীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সহ নারী-পুরুষের সমতা ও গ্রামীন দরিদ্র নারী জনগোষ্ঠির দারিদ্রতা বিমোচন তথা নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৯১ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নারীর ক্ষমতায়ন এর লক্ষ্যে যুব নারী নেতৃত্ব গঠন, বাল্যবিবাহ বন্ধ, নারীর প্রতি যে কোন ধরনের সহিংসতা রোধ ও নারীর নিরাপদ স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পরিচালিত অন্যান্য কর্মসূচীর পাশাপাশি নারী উদ্যোগ কেন্দ্র (নউক) এর ‘উইমেনস ক্যান্সার কন্ট্রোল প্রোগ্রাম’ নামে একটি বিশেষ কর্মসূচী গ্রহন করা হয়েছে । উক্ত কর্মসূচির আওতায় জাতীয়, আঞ্চলিক ও সামাজিক পর্যায়ে স্তন ও জরায়ুমুখের ক্যান্সার প্রতিরোধে জনসচেতনতা, প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার নির্ণয় ও চিকিৎসা বিষয়ক দিক-নির্দেশনা প্রদান করা হবে।
জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কর্মস্থল ও সমাজভিত্তিক কার্যক্রমও পরিচালনা করা হবে। উক্ত কার্যক্রমটি প্রাথমিকভাবে কিশোরগঞ্জ জেলার ১৩টি উপজেলায় পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়াও কিশোরগঞ্জ জেলা শহর, পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দুর ইউনিয়ন ও ঢাকার সাভারে অবস্থিত মোট তিনটি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সমাজভিত্তিক ক্যান্সার সেবা চালু করা হবে। টেলিমেডিসিনের সহায়তায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ নেয়ার ব্যবস্থাও থাকবে। নারী উদ্যোগ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে কিশোরগঞ্জের জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলায় স্তন, জরায়ুমুখ ও মুখগহ্বরের ক্যান্সারের একটি সমন্বিত ও সংগঠিত স্ক্রিনিংয়ের একটি পাইলট প্রকল্প চালু করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে জেলা বিএমএ সভাপতি ডাঃ মাহবুবুল ইকবাল বলেন, ক্যান্সারের সচেতনতার পাশাপাশি ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের ও পরিবারের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য ‘’পেলিয়েটিভ কেয়ারের’’ বিষয়ে সবাইকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। স্বাচিপ সভাপতি ডাঃ দীন মোহাম্মদ বলেন, মূলত তিনটি কারণে যেমন রেডিয়েশন, জেনেটিক ও কেমিক্যালের কারণে মানুষের ক্যান্সার হচ্ছে। কিশোরগঞ্জ জেলার সকল এনজিওদের সমন্বয়ের এই ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করা যেতে পারে। বিশেষ করে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত মহিলা সদস্যদের সাথে কমিউনিটি পর্যায়ে সচেতনতামূলক কাজের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। সেক্ষত্রে সরকারী ভাবে সকল সহযোগিতা করা হবে।